Monday, October 30, 2017

আধ্যানের ডায়েরী - সবার সাথে খেলা ( দ্বিতীয় পর্ব )



তাহলে বুঝতেই পারছ বড়দের সাথে খেলাটা বেশি ইম্পরট্যান্ট. এতক্ষন মিনমিনেদের কথা বলছিলাম , এবার বলবো তাদের কথা যারা আমার ধপ্পা  কে পজিটিভলি নিয়ে আমায় বিট করে আমার চোখ আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে  দিয়েছে যে আমার হাইট বড় হলেও আমি এখনও অনেক ছোট. তাদের একজনা হলো রেনে , একজন সিঞ্চন আর একজন অলিভার।  

সেদিন আমরা একটা বেবিকে দেখতে গেছিলাম।  ওটা খুব বেবি। বাবার কোলেই শুয়েছিল।  আমি গেলাম , দেখলাম কিন্তু ইগনোর মারলাম।  কারণ তখন রেনের দেখা পেয়েছি।  সে আমার থেকে অনেক বড়।  রেনে দিদি।  তো সেই রেনেদি বেশ মজার।  বেশ মিষ্টি হাসে।  আমি আমার স্বভাবপ্রসুত ভাবে প্রথমে এগিয়ে গিয়ে ভাব জমাতে দেখি আমার ডাকে সারা দিলো। আমি যেরকম করে শুরু করি সেরকম করেই সামনে গিয়ে হাত পা নাড়াতে দেখি আমাকে বেশ নকল করে উত্তর দিতে লাগলো।  সে আবার বাবা মার ভাষায় কথা বলতে পারে। হঠাৎ বাবা পেছন থেকে ফোড়ন কেটে বললো, ‘সাবধান ও কিন্তু ধাক্কা মারতে পারে’ . আমার খুব প্রেস্টিজে লাগলো।  এ আবার কি রে বাবা।  লোকে নিজের সন্তানের ত্রূটি লোকায়।  আর এ গিয়ে ছড়ায়। ধাক্কা মারার কোনো অভিপ্রায় না থাকলেও মারলাম এক ধাক্কা।  ধপাস করে পরে গেলো রেনেদি।  আমি ভাবলাম বেশ জোরে হয়েছে।  থতমত খেয়ে গেছিলাম।  কারণ এর পরেই ওই সব মেয়েলি নাকি কান্না শুরু হবে আর আমি এস ইউসুয়াল ক্রিমিনাল হয়ে জুল জুল করে তাকাবো।  কিন্তু না , বীরাঙ্গনা উঠে দঁড়ালো।  আর আমার কাছে একবার এসে আবার দৌড়ে পালিয়ে গেলো।  

এখানেই আমি অবাক হয়ে গেলাম , হিসেবটাতো মিললো না।  এবার আমি কি করবো।  কিছুক্ষন ভোঁদার মতো দাঁড়িয়ে ছুটে গেলাম।  দেখি কি হয়।  ও ও দেখি ছুটে পালালো।  আমিও ছুটছি , রেনেদিও ছুটছে।  অনেকক্ষন ছোটার পর রেনেদি হাঁফিয়ে পড়লো। আমিও ধপ্পা মারতে যেই না এগিয়েছি , ওমা এতো বসে পড়লো। এবার কোথায় ধপ্পা দেবো।  কিছুক্ষন  ঠেলে ঠুলে যখন পাশে দঁড়িয়ে কনফিউসড লুকটা দিলাম, দেখি আবার দৌড় লাগিয়েছে।  আমিও আবার দৌড়, আবার রেনেদি ক্লান্ত আবার ধপ্পার চেষ্টা, আবার রেনেদি মাটিতে।  এরকম করে বেশ কিছুবার চলার পর আমি ক্ষান্ত দিলাম।  

পরে বাড়ি ফিরে ব্যাপারটা থেকে শিখলাম যে ধপ্পাকে কি সুন্দর ভাবে ডজ করা যায়।  ওই ঘ্যানঘ্যান মিনমিনে গুলো সল্যুশন না বার করে শুধু আমার ওপর আওয়াজ দিয়ে গেলো, তও ইন্ডাইরেক্টলি ভায়া বাবা মা।  কিন্তু এ কি করল., প্রব্লেম থেকে এস্কেপ না করে ফেস করলো।  আর আমিও ধপ্পা দিতে পারলাম না।  কিন্তু সিঞ্চনদা ব্যাপারটা অন্য লেভেলে নিয়ে গেছিলো।  

সেদিন দুর্গাপূজায় সবাইকে যখন সো কল্ড ঠেলে ফেলে দিচ্ছি।  তখন বাবা আমাকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে এলো।  সেখানে দেখি আমার থেকে প্রায় এক হাত লম্বা একটা ছেলে  ধুতি পড়া বাবার সাথে খেলছে।  আমিও বাবার হাত ছাড়িয়ে দৌড়ে যেতে ওর বাবা বললো , ‘ সিঞ্চন , ইউ প্লে উইথ হিম ‘ . ভীষণ রকম লজ্জা দিয়ে সিঞ্চনদা বললো , ‘বাট হি ইস জাস্ট এ বেবি।’ আবার রক্ত গেলো গরম হয়ে।  বয়সে ছোট বলা একসেপ্টেবল কিন্তু বেবি ইস ইন্সাল্ট।  ছুটে গিয়ে মারলাম এক ধাক্কা।  জোর আমারও আছে।  গেলো পরে।  কিন্ত উঠে দাঁড়ালো আবার।  কাঁদলো না।  মনে হলো ব্যাপারটা একসেপ্ট করে নিয়েছে।  ওর বাবা ততক্ষনে বলে চলেছে , ‘হি ইস জাস্ট ট্রাইং টু বি ফ্রেন্ড .’ ওর বাবার কথায় লজ্জা পেয়ে গেলাম। আমার ভাষায় সরি বলতে বলতে যেই না এগিয়েছি ও বাবা উল্টে দেখি আমায় দিলো এক বেদম জোরে ধাক্কা।  গেলাম উল্টে পরে।  শান বাঁধানো মেঝেতে পরে বেশ লাগলো।  কোথা থেকে জানিনা কান্না  বেরিয়ে এলো।  ভ্যাঁ করে কেঁদে দিলাম।  বাবা এসে আমাকে সেই একই কথা , ‘হি ইস জাস্ট ট্রাইং টু বি ফ্রেন্ড’ কিন্তু আমি ওর মুখ চোখ দেখে বুঝে গেছি ইঁট ছুঁড়লে পাটকেল খেতে হয়। কিন্তু আমি অলওয়েজ জেন্টলম্যান।  আমি আবার গেলাম ওর সাথে খেলতে।  দেখলাম সব ঠিক ঠাক।  ও শুধু বুঝিয়ে দিলো যে ও আমার থেকে বড়।  সি, দ্যাটস আই অলওয়েজ এক্সপেক্ট ফ্রম বড়।  

রেনেদি ডজ করে আর সিঞ্চনদা পাল্টা এটাক করে বুঝিয়ে দিলো আমার এখনো অনেক পথ চলা বাকি।  কিন্তু অলিভার যা করলো সেটা আমার ইগো চুরমার করে দিলো। বাবা সবসময় বলে আমি নাকি পকেটসাইস পাওয়ারহাউস।  আমার নাকি এনার্জি খতমই হয় না।  আমিও শুনতে শুনতে কথাটা বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম।  তাই আমি যখন দৌড়াতে আর খেলতে আরম্ভ করি , তখন আর থামি না।  কিন্তু সেদিন ওয়ালমার্টে গিয়ে যখন এই অলিভার নামক সাদা ছেলেটির পেছনে দৌড়াতে আরম্ভ করলাম।  তখন ও না ধাক্কা দিলো , না বসে পরে ডজ করলো , ও শুধু দৌড়ে গেলো আমার সাথে।  একবার সামনে , একবার পেছনে।  যেই না ধরতে যাচ্ছি দেখি খপাৎ করে পালিয়ে যাচ্ছে।  আমি তো মহা ফাঁপরে পড়লাম,  আমি যখনিই যাকে ধরতে গেছি তখনিই তাকে ধরতে  পেরেছি।  বার বার না হলেও অন্তত একবার তো বটেই।  কিন্তু এ তো প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ধরাই  দিলো না।  আমি শুধু দৌড়েই গেলাম উইদাউট এনি সাকসেস রেট।  দ্যাটস রিয়েলি রিয়ালি নট ফেয়ার।  আমি জান  প্রাণ লাগিয়ে দিলাম কিন্তু সে অধরাই থেকে গেলো।  একটা আইলের মধ্যে কি করে শরীর বাঁকিয়ে বাঁকিয়ে আমাকে কাটিয়ে এদিক ওদিক দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে আমি এখনোও পর্যন্ত বুঝতে পারিনি।  

যাইহোক , লেসন লার্ন্ট কমপ্লিটলি। এবার আমি ঠিক করেছি আর কাওকে ধপ্পা ধপ্পা খেলবো না।  খেললেও হেরে গেলে কাঁদবো না।  কাঁদলেও বেশি কাঁদবো না।  কিন্তু , ইয়েস দ্যাট ইস সত্যি যে আমি বড়দের সাথে খেলাও ছাড়বো না।  ওই বাচ্চাদের সাথে খেলতে খেলতে আমার কম্পিটেন্সি কমে যাচ্ছে।  আমি যে পথে যাচ্ছি সে পথই ঠিক।  আই উইল ওভারকাম সাম ডে।   

আজ তবে এখানেই থাক। পরের পর্বে আমার বেস্ট খেলার পার্টনার মা বাবার সাথে খেলা নিয়ে লিখবো। ততক্ষণ অপেক্ষা।  


আধ্যানের ডায়েরির আগের পাতাগুলো 



No comments:

Post a Comment