Wednesday, July 31, 2013

ধর্ষণকারীদের প্রতি


বাবার মুখ থেকে ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি এক গ্রাম্য প্রবাদ। মানুষ সন্যাসী হয়
আউশে, পৌষে , মাগ মরা, নির্বংশে , ভয়ে , ভক্তিতে , পেটের দায়ে আর ড্যাসের দায়ে। এই ড্যাশ টা মহা সাংঘাতিক ড্যাশ। ভদ্রলোক কোনদিন শুন্যস্থান পূরণ করেননি। কিন্তু এই ড্যাসের ঠেলায় আজ আপনাদের মত মানুষরা তৈরী হয়েছেন। দুঃখের বিষয় যে আপনারা সন্যাসটাও নিতে পারেন না। আপনাদের অস্তিত্ব বহু পুরাতন। ইতিহাসের মলিন পাতায় টুকি মারেন মাঝে মাঝে। কিন্তু অধুনা ভূত মানে রিসেন্ট পাস্ট এ আপনাদের পদচিহ্ন স্বাপদের মত স্পষ্ট এবং অমলিন।

প্রাচ্যের দশ হাজার বছরের ইতিহাসে পুরুষরা শক্তি প্রয়োগ করে নারীদের দখল নিয়েছেন, এর নজির বহুল। নারী তাদের কাছে ছিল সামগ্রী। আর আপনাদের কাছে "মাল". তফাত শুধু এইটাই যে তারা নারীর হৃদয় ও দেহ  অধিকার করতেন  পুরুষদের পরাজিত করে। আর আপনারা নারীর দেহের অধিকার নেন  নারীর সযত্নে সংরক্ষিত আব্রু কে পরাস্ত করে। আপনারা তাতেই খুশি। যা পাই তাই লাভ। বিনা পয়সায় পাওয়া তো। যেটুকু লোটা যায়। ক্ষণেকের প্রচেষ্টা আধা প্রাপ্তি আধা বিজয়ের সুখ। কোনটাই পাওয়া নয়। যদিও তাতে কিছু এসে যায় না। খুঁটে খেতে আপনারা ভালই পারেন। পৃথিবী এগিয়ে যাক, আধুনিক হোক, আপনারা কিন্তু আদিমতার সংরক্ষক। আপনাদের উপস্থিতি টিকিয়ে রাখে আমাদের পূর্বপুরুষের অস্তিত্ব।

আপনাদের চিন্তার সরলতা হৃদয় স্পর্শ করে। যাও খাও চলে এস। ফিরে তাকিও না মাংসের হাড়ের দিকে। আবর্জনা কেউ না কেউ তো সাফ করবেই। সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে মোরা পরের তরে। আপনারা আপনাদের কাজ না করলে, পুলিশ , উকিল, সংবাদপত্র, সেল্ফ ডিফেন্স কোচিং ক্লাস  সব চলবে কি করে। আর আমরাই বা তর্ক করব কি নিয়ে। পশিমবঙ্গ তো এখন আপনাদের জন্যই বিখ্যাত। খেতে , শুতে , হাঁটতে চলতে এখন শুধু আপনাদেরই চিন্তা আর কিশোরীদের স্বপ্নে এখন তো হিরো রা হেরো। আপনারাই সেরা।

আপনাদের এই গেরিলা আক্রমন চে গেভারা যদি দেখতেন তাহলে সত্যি তাকে অকালে প্রাণ হারাতে হত না। আপনাদের মতই বেঁচে থাকতেন। মাঝে মাঝে খামচে এক মুঠো সম্মান কেড়ে নিয়ে পলিটিসিয়ানদের ধুতির নিচে লুকিয়ে পরার আপনাদের যে কৌশল তা সত্যি ভাবনার অতীত। রাজনীতির সবথেকে বড় অস্ত্র তো আপনারা। বোমার থেকে বিস্ফোরক আপনাদের কালিপটকা। মাফ করবেন কালিপটকা বলার জন্য। কিন্তু আপনাদের একটা কালিপটকা আর দুটি চকলেট বোমার কেরামতিই মনে হয় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটাবে। এখন তারই প্রস্তুতি জোর কদমে। নানকিং থেকে কঙ্গো , ইরাক থেকে চেচনিয়া রাজনীতির ধজা তো আপনারাই ধরেছিলেন। আপনারা না থাকলে বিপ্লবের সূত্রপাত হত কি করে। বঙ্গের রাজনীতির এত পরিবর্তন আনতে তো আপনাদের অবদান প্রথম। যেখানে শক্তি নিঃশেষ হয় সেখানে আপনাদের নিষেক কার্যকরী হয়।

আপনাদের দলগত  প্রচেষ্টা সকলের কাছে নিদর্শন হয়ে থাকা উচিত। একা জেতা সম্ভব নয়। পাঠ্য পুস্তকে লাঠি ভাঙ্গার উদাহরণের জায়গায় আপনাদের যৌথ উদ্যোগে সাফল্য লাভের কাহিনী পড়ানো উচিত। পুরুষ দৈহিক শক্তিতে নারীর থেকে বেশি , আর নারী মানসিক শক্তিতে। আপনাদের যৌথ উদ্যোগ কেমন করে ভেঙ্গে ফেলে সেই মানসিক শক্তি তা শিক্ষনীয়। একা ধরা পড়লে ধনঞ্জয় হয় , তাই আপনারা এখন যৌথভাবে ধরা পরে জেলের ভেতর থেকে ভগত সিংহের মত আপনাদের ঐতিহ্য প্রচার করে চলেছেন। ভাবতে ভালো লাগে আপনারা কি সুন্দর মাইল মিশে কাজ করেন। নারীর মত উপাদেয় খাদ্যবস্তুকে আপনারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন। কর্পোরেট সেক্টরে HR গেম এ আপনাদের যৌথ ক্রীড়াকে introduce করা উচিত। টীম বিল্ডিং এর চূড়ান্ত নিদর্শন আপনাদের গ্যাং রেপ।

নারীর পোশাকের ঔধত্ব রুখতে আপনাদের যে অক্লান্ত পরিশ্রম মানুষ যেন ভুলে না যায়। পিতা তার কন্যার মিনি স্কার্ট এ আপত্তি জানালে কন্যা ঘর ছেড়ে দেয় , সেই কন্যা আপনাদের উদ্যোগেই ফিরে আসে পিতার কোলে। ধর্মীয় সংস্থান দোষ দেয় সেই কন্যার। আর আপনাদের জয়ধনী দেওয়া হয়। প্রকৃতির কাছে সকলেই শিশু, সেই প্রকৃতিই যখন নারীকে দুর্বল করেছে তখন সবলের উচিত তাকে সবলে ভোগ করা। এই সত্য আপনারাই তো পুনঃপ্রতিস্ঠান করেছেন। ফুল যদি পরাগ কে ঢেকে না রাখে তাহলে প্রজাপতি তো বসবেই। তাই আঢাকা খাবারের ওপর মাছির মত বসে আপনারাই শেখাচ্ছেন শালীনতা। নারী স্বাধীনতার বোকা বোকা বুলি বলা লেডিস কম্পার্টমেন্ট - এ চড়া নারী বাদীদের আপনারা শাস্তি দিয়েছেন লেডিস কম্পার্টমেন্ট এ উঠে। ঘাস সর্বদা পায়ের তলাতেই থাকে কিন্তু সুন্দর ফুল ফোটায়। তাদের ফুল মাথায় রাখতে আর ঘাসকে সারাজীবন দলতে হয়। তাদের বাড়তে দিলে সে বাঁশ হয়ে দাড়ায়। আহা কি অপরূপ শিক্ষা। গনেশ থাকলে মহাভারত পার্ট ২ বেরোতো।

কচি পাঁঠার ঝোল যদি ভালো লাগে , তবে কচি শিশুর স্বাদ কত সুন্দর হবে। এই ভাবনা সত্যিই আপনাদের আগে কেউ ভাবেনি। আম পাকার আগে আঁচার করে খাও। পাকা আম শুধু ফল হিসেবে খাওয়া যায়। কিন্তু কাঁচা আম দিয়ে  টক কর, আম তেল কর, শুকিয়ে চারু বানাও, আমচুর কর আরো কত কি। আপনারা শিশুদের সাথে প্রথম খেলেন পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর খেলা। সেক্স education এর জ্ঞানের থেকে আপনাদের হাতে কলমে শিক্ষাদানের প্রয়াস সেই শিশুরা সারা জীবন মনে রাখে। তারা বড় হযে ওঠার আগেই পরিনত হয়ে ওঠে। আর তাতেই তো বিশ্বসংসারের লাভ। শৈশব তো সমাজের বোঝা। fruitless ইনভেস্টমেন্ট। আপনারা তাদেরই একটু কাজে লাগিয়ে দেশকে আগে বাড়িয়ে নিয়ে চলেছেন। ধন্য আপনাদের বিচারবুদ্ধি। আর ব্যবহার করে ফেলে দিতেও সমস্যা নেই। পাউচ প্যাক তো। পুড়িয়ে দিলে কম ধোঁয়া বেরয় আর গর্তে ফেললে ছোটো জায়গা লাগে। optimization অফ resources.

আপনারা দর্শনে ভেদ বিভেদ করেন না। সকল নারীকেই সমান চোখে দেখেন। ভগবান যাদের কুত্সিত করে ঠেলে দিয়েছেন অন্ধকারে তাদেরও আপনারা কাছে টেনে নেন। যাদের দেখলে আমাদের মত সাধারণ পুরুষ আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে, "ভগবান বোবা কলা করে দাও সুধু  হাত দুটো কেটো না।" আপনারা নিজ দেহ নির্যাস প্রদান করে তাদের ইহজীবন স্বার্থক করেন। দুর্গন্ধে পরে থাকা রাস্তার পাগলীও প্রসবিনী হয় আপনাদের দৌলতে। লোকে অর্থ উপর্জন করে দান করে , আর আপনারা নিজ দেহে সযত্নে লালিত স্নেহবিন্দু দান করেন। কি অসীম আপনাদের দান। কর্ণর নাম মুছে আপনাদের নাম লেখা উচিত দাতা হিসেবে।

পুরুষ বহুগামী এই সত্য মধ্যযুগীয়। নারীও তাই।  নারীকে পেষণ করা যায় কিন্তু তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। আপনারা তাই যৌথ ভাবে তাদের বহু পুরুষের স্বাদ দিয়েছেন। কৃতার্থ করেছেন তাদের নারী জন্ম কে। তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছেন একদিনের , এক মুহুর্তের জন্য। তাদের ছিন্ন বসনে , অশ্রু বিসর্জনে জমেছে খুশির বাস্প। আচম্বিত কৌমার্য হরণে কিশোরী হয়েছে নারী। তাদের বহুগামিতার গোপন স্বপ্ন সার্থক করে তাদের ভবিষ্যত বানিয়ে দিয়েছেন আপনারা। কত নারীর পারিবারিক বন্ধন ভেঙ্গে হয়েছে পতিতা, বারবনিতা, কল গার্ল। আপনাদের মুগুর ভেঙ্গেছে দুয়ার এনেছে জ্যোতির্ময়। আপনাদের কর্মে তারা ছেড়েছে গৃহের আর পরিচিত সমাজের গন্ডি। পেয়েছে ফাইভ ষ্টার হোটেলে রাত জাগার সুধা। ভাতের ফ্যান ছেড়ে শ্যাম্পেনে দিয়েছে চুমুক। আপনাদের ক্ষুদ্র ত্যাগে তারা বিস্ববিজয়ের সোপান উড়িয়েছে। এনেছে টুরিস্ট , এনেছে বিদেশী মুদ্রা। ভাব বিভোর সংসার সামলানো ছেড়ে অর্থ রোজগারে নেমেছে। একই সাথে নারীত্বের পেষণ ও উত্থান আপনাদের দাড়ায় সম্ভব।

হে মহান আত্মা, অসীম পৌরুষের অধিকারী, হে শক্তির প্রচারক, হে নিরহংকার আত্মপ্রচার বিরোধী, হে নিদ্রাহীন কর্মী তবে কেন এই বাছবিচার। চ্যারিটি কেন begins at home নয়। কেন আপনার জন্মদাত্রী মাতা , আপনার কন্যা, আপনার ভগিনী এই মহান কর্ম থেকে বঞ্চিত হয়। কেন আপনাদের এই মহান প্রচেষ্টা তাদের দিয়ে শুরু হয় না। কেন তারা গোপনে অশ্রু বিসর্জন করে এই যজ্ঞের প্রথম আহুতি না হওয়ার জন্যে। তাদের নরম দেহ কেন অস্পৃশ্য আপনার কাঠিন্যের কাছে। কেন তারা এক সাথে অনেক পুরুষের স্বাদ পায়না। কেন তাদের শৈশব দেয়ালায় নষ্ট হয়। কেন আপনার স্নেহবিন্দু থেকে আপনার কন্যা প্রসবিনী হয় না। তাদের প্রতি এই নির্বিচার কেন? আমি তাদের হয়ে আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি। তারা আপনার। নির্গুণ স্বজন শ্রেয় , পরঃ পর সদা। হতে পারে তারা খাদ্য হিসেবে পক্ক নয় তবু নারকেল খেলে দাঁত শক্ত হয়। আপনার মহান উদ্যেশে তাদেরও সামিল করুন। Practise makes perfect. তাদের উপভোগ করুন এবং আপনার সাঙ্গপাঙ্গদের উপভোগ করার সুযোগ করে দিন। তবেই না একদিন আপনি সবার সামনে মাথা উঁচু করে ভারতমাতার ইজ্জতে হাত দেওয়ার মত কুশল হয়ে উঠবেন। উইকিপেডিয়ায় আমরাই হব শ্রেষ্ঠ। ভারত আবার জগত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে।


5 comments: