Friday, March 27, 2020

#গো_করোনা_গো ( 9) - আমেরিকা ১০০, ০০০ ( ১ লক্ষ )

#গো_করোনা_গো ( 9) - আমেরিকা ১০০, ০০০ ( ১ লক্ষ )



এক লক্ষ পূর্ণ করলো আমেরিকা।  পঞ্চাশ হাজার মাইলস্টোন থেকে এক লাফে এক লক্ষে পৌছাঁতে লাগলো মোটে তিন দিন।  কি দারুন গতি না।  সব সাহস, সব “পুশিং দা লিমিট ” এক এক করে শেষ হয়ে যাচ্ছে।  সমস্ত দেশকে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে আমেরিকা।  

টু ট্রিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ দেওয়া হলো দেশের মানুষদের।  আমরা এখানে মানুষ নই আজ।  তারাও মানুষ নয় যারা অবৈধ।  আমরা বৈধ হলেও আমরা বিদেশী।  অদ্ভুত পরিস্থিতি এখনো আমাদের। আমরা না এদেশের না নিজের দেশের।  দেশের মানুষ সাধারণ ভাবেই সুযোগ পেলে আমাদের সম্বন্ধে বেশ কিছু কঠিন কথা বলে থাকেন।  দেশদ্রোহী , সুবিধাবাদী , মা বাবা কে দেখে না , ইত্যাদি ইত্যাদি।  আজ আরো বেশি করে বলছে।  বিদেশ থেকে ঘুরে আসা মানুষদের জন্যেই তো এই সমস্যা।  তাই তারা আন-ওয়েল্কাম্ড। এখানে সকলে যখন বেরিয়ে আসবে ঘর ছেড়ে , করোনার ভয় ছেড়ে।  তখন দ্বিতীয় নিধন শুরু হবে এই ইমিগ্র্যান্ট দের। তাই শাঁখের করাতের মতো অবস্থা নিয়েই অন্যবারের মতোই এবারও বলছি , “ঠিক আছে। ” 

আজ নিউ ইয়র্ক একাই প্রায় পঞ্চাশ হাজার কেস হতে চললো।  ভয়াবহ পরিস্থিতি।  আর দ্বিতীয় ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন নিউ জার্সি , যা ভারতীয়দের লাইফলাইন , আজ তারা ইন্ডিয়া স্টোরগুলি বন্ধ করার ঘোষণা করলো।  পরিণতি হিসেবে একটু আগে কানেটিকাটে বন্ধ হতে শুরু করলো দেশি দোকান গুলো , কারণ তাদের সাপ্লাই আসে নিউ জার্সি থেকে।  

ভাবছেন সমস্যা কি? আমেরিকান দোকানগুলো তো আছে।  বাই ল খাবারের দোকান বন্ধ তো করা যাবে না। খেয়ে পরে বাঁচতে তো পারবেন।  শুনুন, তবে একটা কথা বলি , আমেরিকার ভারতীয়রা দেশে গিয়ে যতই ফটর ফটর করুক , তারা ভারতে থাকা ভারতীয়দের থেকে বেশি ভারতীয়।  কারণ একটাই , তারা যে সময় দেশটা ছেড়ে চলে এসেছে , সেই স্মৃতি আঁকড়ে ধরে , পুঁই চচ্চড়ি আর বড়ি দিয়ে শুক্ত রান্না করে খাচ্ছে।  আর এই ইন্ডিয়া স্টোর গুলো যোগান দিয়ে চলছে তাদের স্মৃতিকথায়।  তাই অনেকেই এমন আছেন যারা আমেরিকান দোকানের থেকে ইন্ডিয়া স্টোরের ওপরই ভরসা করেন।  আর কস্টকো সবে ঘি বিক্রি করা শুরু করলেও , কাড়িপাতা , সর্ষে আর ভিন্ডি বিক্রি এখনো আরম্ভ করেনি।  

যাইহোক, আজ ভয় জাঁকিয়ে বসেছে।  গতি দেখে ক্ষতির সম্ভবনা আন্দাজ করতে পারছি না।  দেশে ফিরে যাওয়ার উপায় নেই।  বাবা মা দেশে পরে আছে।  এই মুহূর্তে তাদের কেউ মারা গেলে , হয়তো মুখে আগুন পর্যন্ত পাবে না। একদিকে ভবিষ্যতের চিন্তা , একদিকে পুরাতনের ঋণ। এই প্রচন্ড চাপে , আমি একা নই।  কাতারে কাতারে আটকে থাকা মানুষ।  

ঘরে আটকে থাকা অনেক সমস্যা।  কিন্তু থাকলে ভালো হয়।  আমেরিকা ফাঁকা দেশ।  মাইলের পর মাইল জায়গা পরে আছে যেখানে হাঁচলে তো ছাড়, বন্দুক ছুড়লেও বুলেট এক জায়গায় গিয়ে টুপ করে পরে যাবে, কিন্তু মাথা পাবে না। সেই দেশে যখন এরকম অবস্থা তখন বারো মাসে তেরো পার্বন আর বনগাঁ - ক্যানিং - শান্তিপুর লোকালের দেশের কি অবস্থা হবে ভাবুন।  তাই বাড়িতে থাকুন। 

শেষে আজ না বললেই নয়।  মহিলাকে যতই ক্ষেপি পাগলী বলি না কেন , এই দুর্যোগের দিনে , ঘরে বন্দী না হয়ে মানুষের জন্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।  আর হবু মুখ্যমন্ত্রী ঘরে রান্নার ছবি পোস্ট করছেন।  আর কিছু বলার নেই।  

ভালো থাকবেন। …… মন হালকা করে আবার লিখবো পরে।    

No comments:

Post a Comment