Friday, November 24, 2017

প্রথম চুম্বনের ঠিক আগে

ব্যাপারটা কি ঠিক হবে ? ও কি আমার ডেসপারেশন বুঝতে পেরে যাবে।  ডেসপারেট তো আমি বটেই।  আর এতে খারাপ কি আছে।  অনেক দিন তো হলো।  সিনেমার প্রেমে তো প্রেমের সূত্রপাতই চুম্বনে।  এখানে তো শুধুই প্রতীক্ষা।  কিন্ত ব্যাপারটার মধ্যে সিনেমাটিক সৌন্দর্য্য না সৃষ্টি করলে মনে রাখার মতো কিছু থাকবে না।  কত বড় বড় ঋষি মুনি লিখে গেছেন তাদের প্রথম চুম্বন নিয়ে।  ওর ওই ঠোঁট দুটো কি যে টানে না।  কিন্ত চুম্বন বড্ডো বেশি ওভারহাইপড না । এটা তো পরিণয়ের পরিণতি।  কিন্তু পরিণতি তো সেক্স।  তবে এর প্রয়োজনীয়তা কি ? এ তো সেক্সের আহ্বান।  আমি কি তাই চাই।  অবশ্যই।  কিন্তু এখনই কি চাই ? অবশ্যই না।  সারা জীবন পরে আছে।  তবে কি চাই।  শুধু একবার চুম্বন। অনেক কষ্টে পটিয়েছি।  যদি হাতছাড়া হয়ে যায়।  কিন্তু স্বপ্নকে বাস্তব করার দরকারও তো আছে।  কতদিন আর ভেবে ভেবে কাটাবো।  যদি আমি চটকে দি।  নাকে নাকে ধাক্কা লাগেনা সেটা অলরেডি প্রমাণিত।  কিন্তু বাকি গুলোও তো সমস্যা।  পেট পরিষ্কার না থাকলে মুখে গন্ধ হয়।  আমি না হয় ভেবে করছি।  কিন্তু ওকে ভাবার সময় দিলে ব্যাপারটা কি ভালো দেখাবে।  ওর সাথে কি আলোচনা করবো।  সব কিছু বলে করার মধ্যে আনন্দ কোথায়।  সারপ্রাইস বলেও তো একটা জিনিস আছে।  কিন্তু সারপ্রাইস যদি ওর ভালো না লাগে।  বিশেষ করে এটা তো দেওয়া নয়।  নেয়াও।  যদি ওর মুখে গন্ধ থাকে।  সকালে ব্রাশ করতে ভুলে যায়?  সব কিছুতে আমি এতো ভাবি কেন।  এতো খুঁতখুঁত করলে কিছুই পাওয়া যায় না।  পাশে বসলে কি সুন্দর গন্ধ বেরোয় ওর গা থেকে।  কিন্তু কখনো তো খারাপ গন্ধ নাকে আসেনি।  কোনো এক সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যা এর জন্য চটকে না যায়।  সিনেমায় তো কি সুন্দর ছেলেরা ঠোঁট এগোলে মেয়েদের চোখ বন্ধ হয়ে আসে।  কিন্তু সেসব তো টোটাল সাবমিশনে। যখন দুপক্ষই রেডি। লোকে বলে মেয়েরা তাদের শরীর তাকেই দেয় যাকে সে ভালোবাসে।  ও কি আমায় ভালোবাসে।  কিন্ত আমি কি ওর শরীর চাইছি নাকি।  মানে ঠোঁট অবশ্যই শরীরের পার্ট কিন্তু তাও শরীর ব্যাপারটা পাঁচফুট সাত ইঞ্চি পুরোটা।  আমি তো হাফ ইঞ্চি বাই দেড় ইঞ্চির ডিমান্ড করছি।  উফফ প্রচন্ড ক্যালকুলেশন করছি।  ইঞ্চিগুলো গোলমাল না হয়ে যায়।  হলেই বা কি।  আমি যা চাইছি আমি জানি। ও রেডি হয়ে গেলেই ব্যাপারটা ঘটে যাবে।  কিন্তু তাহলে তো বলতে হবে। কতবার তো একেবারে কাছে চলে এসেছিলাম।  কিন্তু কি যেন আটকে নিয়েছিল।  টেনে নিয়ে করে নিলেই তো হয়।  হাতে তো চুমু খেয়েছি কতবার।  ইলেকট্রিক শক তো লেগেছিলো।  ওতেই তো শান্তি পেতে পারতাম।  এই ফ্রেঞ্চরা সব কিছুতেই বাড়াবাড়ি।  থুতু থুতুতে না মিশলে যেন আর কিছু থাকে না।  যদি সর্দি থাকে ? একটু আগেই যদি ওয়াক থু করে একটা বড় কফওয়ালা থুতু ফেলে আসে।  ইসসস।  সব রোগ তো থুতুতেই থাকে।  যদি আমরাও হয়ে যায়।  আর রোগ হওয়ার পর ব্রেকাপ হয়ে গেলে তো সব খোয়াবো।  কি দরকার।  আগে রিলেসন পাকা করতে হবে।  কিন্তু রিলেশান কি আম নাকি, যে রং পাল্টালে বুঝতে হবে পেকে গেছে।  কিছুটা হিমসাগরের মতো।  কিন্তু পাকা চোখ না থাকলে ভুল হিমসাগর খাওয়া হয়ে যায়।  কিন্তু পাকা চোখ হতে গেলে অনেকের সাথে প্রেম করতে হবে।  কিন্তু এ তো আমার এক এবং একমেবাদ্বিতীয়ম।  এখন কি করি।  পাত্রীই যদি না রেডি হয় তাহলে স্থান আর কাল ভেবে কি লাভ।  বলে না , রোমান্টিক প্লেসে নিয়ে গেলে সব রোমান্স বেরিয়ে আসে।  ফুলের বনে মানে নার্সারিতে নিয়ে যাবো?  ধুর ধুর ওখানে কি করে চুমু খাবো।  তার থেকে সর্ষে খেতে।  দিলওয়ালে দুলহানিয়া টাইপ। নাহঃ বড্ডো পোকা ওড়ে।   সিনেমাতেই দেখতে ভালো লাগে।  কাশবনে।  সবে তো গ্রীষ্মকাল ।  সারা বছর অপেক্ষা করার মতো পেশেন্স আমার নেই।  একমাত্র নদীর ধার আমার জায়গা, বা পার্কে।  সেখানেও তো পেছন থেকে কেউ না কেউ এসে খুঁচিয়ে যায়।  তাহলে কোথায় ? সেসব পার্কে নিয়ে যাই যেখানে সবই চুম্বনে রত থাকে। অন্তত দেখে যদি অনুপ্রাণিত হয়ে যায়।   ধুর গা ঘুলিয়ে ওঠে ওসব জায়গায়।  আমার না , ওর।  তাহলে বাড়িতে ডাকি ? মা চল্লিশ বার করে এসে খবর নিয়ে যায়।  ওর ঘর তো ছাদে।  বেশ নিরিবিলি।  কিন্তু বিপদ যেকোনো সময় আসতে পারে।  তার ওপর ওর দাদা আছে।  কি জ্বালা।  আকাশে এক ফালি চাঁদ উঠবে।  ফুরফুরে হাওয়া দেবে।  চুল উড়বে।  এইসব হচ্ছে আইডিয়াল সময়।  কিন্ত এই পোড়া দেশে সেসব ভেবেই লাভ নেই।  একটা চুমু খাওয়া ক্রিমিনাল এক্টিভিটির মতো।  ভাঙা বাড়ি , রিজেক্টেড কারখানা , আন্ডার ডেভলপমেন্ট শপিং মল, এইসবে কি আর রোমান্স আসে।  কিন্তু পাশে এসে বসলেই তো আমার হয়ে যায়।  ও আর আমি , আমার তো কি বাকি কিছু আর চোখে বা মনে পরে না।  এই ডিস্পিরিন টাইপ ঘুলে গিয়েই আমার সমস্যা।  আসল জিনিসেই কন্সান্ট্রেট করতে পারিনা।  লোকে হাসবে শুনলে। বন্ধুরা তো ভাবে এতদিন হয়ে গেলো  এখন তো বাচ্চা টাচ্চা নিয়েও ভাবছি।  কিন্তু এখানে তো সন্নাটা।  কালকে অমাবস্যা।  কালকে সুযোগ।  ওসব তাজমহলের ওপর পূর্ণিমা টুর্নিমা প্রো দের জন্য।  আমি নভিস।  প্রথমে ভুল করবোই।  প্র্যাক্টিস মেকস পারফেক্ট।  শুরু করেই দি।  আমি জানি ও আমাকে ভালোবাসে।  খুব একটা সমস্যা হবে না।  সরি বলতে কি দোষ।  কারো কাছে শুনিনি যে ভুল চুমুতে ব্রেকাপ হয়েছে।  হলে হবে।  মেয়ের কমি নাকি।  এই একটা এক্টিভিটি তে তো আর কেউ নেই।  বাবা মার্ কাছ থেকে তো শিখে আসবো না।  যেসব ইন্টারনেটে ভিডিও টিউটোরিয়াল আছে , সেগুলো দেখলে হাত অন্য জায়গায় চলে যায়। ওকেই আমাকে শেখাতে হবে , আর আমাকে ওকে।  তাহলে সমস্যা কি ? শুধু কনফিডেন্স এর অভাব।  ডর কে আগে জিৎ হ্যায়।  আজ না হলে কাল।  কিন্তু শুরু তো করতে হবে।  কত কনফিউশন।  আগে আপার লিপ , না লোয়ার।  হাত কি পিঠে , না কোমরে।  বুকে বুক , না পাশাপাশি।  আলতো করে , না খামচে ধরে।  লম্বা চলবে , না পরশপাথর টাইপ। চোখ খুলে , না বুঁজে।  আমাকেই এগোতে হবে সেটা জানি।  কিন্তু মোটামুটি একটা ছক থাকলে বেশ হয়।  ব্যাপারটা ইনস্ট্যান্ট। কিন্তু দুধ, জল , চিনি  জোগাড় করে না রাখলে সব গড়বড়।  ওকে, বি কনফিডেন্ট।  মিষ্টি করে বলবো , আগে এগিয়ে ধরবো , ছোট্ট করে করবো , ছিটকে গেলে সরি বলবো।  আর কি ? এই ব্লুপ্রিন্ট স্টার্টিং এর জন্য এনাফ।  এর সাথে ক্যাজুয়াল ড্রেস , মিষ্টি পারফিউম , দশ মিনিট আগে ক্লোরোমিন্ট ,  খালি জায়গা আর হ্যাঁ - একটা গিফট।  গিফট দিলে অনেক গন্ডগোল মিটে যায়।  কনফিডেন্স ইস দা কি।  বাকি সব অদরকারি।  কিন্তু চিন্তা যেন মেটে না।  বিশ্লেষণে মাথায় আরেক সমস্যা এসে দাঁড়াল।  পেট খালি করে গেলে মুখে গন্ধ হয় , আর পেট ভর্তি থাকলে ঢেকুর উঠতে পারে।  চুমু খাওয়ার সময় ঢেকুর উঠতে চাইলে কি করবো।  ধুর ধুর ধুর ধুর।  আর ভেবে লাভ নেই।  সবাই পাদে , সবাই ঢেকুর তোলে আর সবাই শেষমেশ চুমু খেয়েই ফ্যালে।  এতো ভাবে না।  প্রিপারেশন ইস ইম্পরট্যান্ট যখন কোনোকিছুকে পারফেক্ট করতে হয়।  কিন্ত মিস্টেক কোনো জিনিসকে মেমোরেবল করে তোলে।  জ্ঞান প্রচুর , কিন্তু ফাটছেও প্রচুর।  নো ফিয়ার , যা হবে দেখা যাবে, মাভৈ।   

ঠিক আগে সিরিজ

1 comment: