Monday, March 30, 2020

#গো_করোনা_গো ( ১২ ) - USA 150,000




আজকের দিনটা অনেক কিছু ঘটনার।  আড়াই দিনে ১ লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ পৌঁছে গেলো আমেরিকা। প্রথমবার পাঁচশো লোকের মৃত্যু নথিবদ্ধ করলো আমেরিকা।  আমেরিকার প্রথম মেডিকেল স্টাফের মৃত্যু হলো।  নিউ ইয়র্কের ফুসফুস সেন্ট্রাল পার্কে তৈরী হলো টেম্পোরারি ৬৮ বেডের হাসপাতাল।  নিউজার্সির আড়াইশোর ওপর পুলিশের ধরা পড়লো করোনা। ভেন্টিলেটরের দাম কুড়ি হাজার থেকে পঞ্চাশ হাজার হয়েছে।  আর দেশ হাজার ছাড়িয়েছে।  

এখনো ফোনে লোককে বলতে শুনছি ইন্ডিয়ার কিচ্ছু হবে না। কোনো সমস্যাই হবে না।  মোদী বাঁচিয়ে নেবে।  পুলিশ বাঁচিয়ে নেবে।  কোনো না কোনো দেবতা তো আছেই বাঁচানোর জন্য।  সত্যি কি ইন্ডিয়া বাঁচবে।  সত্যি সত্যি কি ভিড়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে না এই রোগ।  না পড়ুক , মানুষগুলো বাঁচুক। যদি সত্যি সত্যি কোনো দেবতা থাকে বাঁচিয়ে নিলে বাঁচিয়ে নিক।  

তবে যদি না থাকে।  আর চায়নার মতো পলিটিকাল নোংরামিতে চাপা পরে যাক বয়স্কদের মৃত্যু , তবে ? আমার আপনার প্রিয়জন তখন মেঘের আড়ালে বা মাটির তলে। একটা কথা বলে রাখি, আমেরিকা ঠিক একই রকম ভুল করেছিল।  ল্যাজ আমাদের মতোই মোটা করে ঘুরে বেড়াতো। এবং টেস্ট এর ব্যবস্থা করেনি।  

দেশেও একই সমস্যা হতে পারে।  আমেরিকাতে দশ লক্ষ টেস্ট পরে , এক লক্ষ লোকের ধরা পড়েছে।  আর আমরা যখন খেলি তখন কোটিতে খেলি।  আমাদের টেস্টই তো করানো হয় না।  কোনদিন সাধারণ সর্দি কাশিতে ডাক্তারের কাছে গেছেন কখনো।  কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্টরাই তো দেশ চালায় , আর যদি কারো একটা মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্তিভ থাকে , তাহলে তো কোনো কথাই নেই। যে দেশে অসুখ সারাতে এখনো লোকে আগে মন্দির মসজিদে তারপর হাতুড়ে তারপর যায় হসপিটালে , সেই দেশে এই ভয়ঙ্কর অবস্থায় কি ভয়ঙ্কর অবস্থা হতে পারে , ভেবেই শিউরে উঠছি।  

সেই মানুষগুলো যারা বয়স্ক , যারা এক্ষুনি মারা গেলেন রাস্তায়।  কে বিচার করবে , তার মৃত্যু করোনা না কিসের থেকে হয়েছে।  বয়স্ক রা তো স্বাস কষ্টেই মারা যায়।  আর বয়স্ক মরে গেলে যৌবনের তো লাভই। অস্বাভাবিক মৃত্যুর পোস্টমর্টেম হয়।  কিন্তু করোনার মৃত্যু এখনও স্বাভাবিক।  দেশের কোটি কোটি মৃত্যুর কারণ চেপে যায় স্বাভাবিক মৃত্যু বলে , আর এই অবস্থায় তো স্বয়ং ক্যারিয়ার জানে না যে সে বইছে।  

সাথে আছে আমাদের অদ্ভুত গা ফিলতি।  আমরা চাই না লোককে কিছু বলতে। সব রোগই গুপ্ত রোগ।  ছোঁয়াচে রোগ হলেও ছুটি নিতে নারাজ।  এইডস কেউ ছোয়াঁচে বলে এপিডেমিক করে তুলেছে তো অনেক আগেই। এপিলেপ্সি বললে বিয়ে হবে না , সাইকিয়াট্রিস্ট দেখালে লোকে পাগল বলে ঢিল ছুঁড়বে , তিন মাসের আগে প্রেগন্যান্সির খবর ছড়ালে নজর লেগে গর্ভপাতের সম্ভবনা থাকবে , এই সবের দেশ আমার ভারতবর্ষ।  সেখানে দাঁড়িয়ে বড় বড় কথা আসে কি করে।  

সারা পৃথিবীতে যা মরেছে তা আমাদের কাছে নস্যি।  যে কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আমাদের লোক মরে অনেক বেশি।  আর স্বাভাবিক ভাবেই বৃদ্ধ ওর শিশুরাই প্রথমে মরে।  এবার শিশুদের রেহাই দিয়েছে প্রকৃতি।  আর বুড়ো বুড়িদের কে দেখে।  

ছবিটা একটি আমেরিকার করোনা হাসপাতালের ওয়ার্ডের ছবি।  একবার ভাবুন , আপনার টেস্ট পসিটিভ হলো।  আর আপনার স্থান হলো ওই ওয়ার্ডের কোনো একটা বেডে।  ভাবুন তো , মৃত্যু আসে পাশে।  রোজ রোজ কোনো না কোনো বেড খালি হচ্ছে , ডেডবডি নিয়ে চলে যাওয়া হচ্ছে স্ট্রেচারে করে। একটু উঁকি মারলেই মৃত্যু টুকি করছে। এইটাই সত্য , বাকিটা নয়।  

যাইহোক , ভিড় সামলাতে আমাদের দেশ এক নম্বরে , তাই হয়তো সময় বলবে দেশের অবস্থা কিরকম হবে।  কিন্তু চেষ্টা করে যান এই সময়ে শিকল পড়ার।  হয়তো কিছু লোক বেঁচে যাবে। 

No comments:

Post a Comment