Tuesday, March 31, 2020

#গো_করোনা_গো ( ১৩ ) - ভয় শুধু ভয়



আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে বেজায় চাপ খেয়ে গেছিলাম।  ওয়ার্ক ফ্রম হোম করছি , কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি লগইন করতে পারছি না।  বিন বিন করে ঘাম হতে লাগলো . এতো লোক মারা যাচ্ছে এতো পয়সার ক্ষতি , তার বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে চাকরি যাওয়া তো শুরু হয়ে গেছে . নিউ ইয়র্ক এ রেস্টুরেন্টের কর্মচারিরা চাকরি হারিয়ে কান্নাকাটি করছে . মালিককে গিয়ে ধরা হচ্ছে , “ ওদের বার করে দিলেন ? ওদের সংসার কে চালাবে ? “ উত্তরে আসছে , “ ওদের রাখলে আমাদের সংসার কে চালাবে আর দোকানটাও তো রাখতে হবে যাতে ওরা ফিরতে পারে. “ ঠিক এই কথাটাই শোনার অপেক্ষা করছি এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আর তার মধ্যে এই কেস .

ম্যানেজার , তার ম্যানেজার পাড়া প্রতিকলিগদের ফোন করে আসল ঘটনা বুঝতে পারলাম আমার বাৎসরিক আইডি রিনিউ এর দিনটি ছিল আজ. যেহেতু করোনার জন্য আমার ডকুমেন্ট সাবমিট করতে আমার ম্যানেজার ভুলে গেছে তাই ওটা ডিএক্টিভেটেড হয় যায় . আধ ঘন্টার জন্য আমার হৃৎপিণ্ডও ডিএক্টিভেটেড হয়ে গেছিলো. 

ভয় কিভাবে আসছে বুঝতে পারছেন তো . এখন যখন লিখছি তখন করোনা টাস্ক ফোর্স এর ডাক্তার ফাউচি হোয়াইট হাউসে  দেশবাসীকে এক লক্ষ মৃত্যুর জন্য তৈরি হতে বলছেন। ডাক্তার বার্কস বলছেন মৃত্যুহার দ্রুত বৃদ্ধি পাবে ও ধীরে ধীরে কমবে।  একমাত্র ওয়াইওমিং স্টেট্ বাদ দিয়ে সমস্ত স্টেট্ আজ মৃত্যুর দিক দিয়ে ইউনাইটেড।  চিরশত্রু রাশিয়া আজ এসে দাঁড়াচ্ছে সাহায্যের জন্য। সকলের কাছে হাতজোড় করা নিউ ইয়র্কের গভর্নরের ভাই আজ করোনার কবলে।  নিউজার্সি অতিরিক্ত রেফ্রিজারেটর ট্রেলার অর্ডার করেছে , অতিরিক্ত বডি রাখার জন্য।  ইন্ডিয়ানা , টেক্সাসে এবরশান কে নন এমার্জেন্সির মধ্যে ফেলে স্থগিত রাখার আদেশ এসেছে।  প্রতিটা স্টেট থেকে আসছে মেডিক্যাল কর্মচারী আর পুলিশের মৃত্যু ও অসুস্থতাটার খবর।  

আর আসছে কিছু ধর্মীয় বেয়াদপের গণহত্যার খবর।  লুইসিনিয়া প্যাস্টর মার্ক এন্থনি স্পেল যখন হাজার জনের গ্যাদারিং এ যীশু যীশু করছিলো , তখন আল্লাহ আল্লাহ করছিলো দিল্লীর নিজামুদ্দিনে। গোমুত্র পার্টি থেকে শুরু করে আমরা তো এই নোংরামিতে এগিয়েই আছি।  

একসাথে মৃত্যুভয় , বেকারত্বের ভয় , আত্মীয়বিয়োগের ভয়, গৃহযুদ্ধের ভয়  আর সাথে ভয় এই ধর্মীয় উন্মাদনার। আর ভয় এই অদ্ভুত বড়লোকদের রাজনীতির খেলায়।  সারা পৃথিবী থেকে যখন প্রাইম মিনিস্টার রিলিফ ফান্ডে টাকা যাচ্ছে , তখন পৃথিবীর সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি চুপ করে পয়সা গুনে চলেছে। যে দেশকে বেচে দেওয়া হলো এই লোকটার কাছে , সেই সরকারের আজ যখন দরকার তখন তিনি ঘন্টা বাজিয়ে শেষ।  না দিক কিছু , অন্তত নিজের দশ লক্ষ কর্মচারী কে যেন না ছাঁটে।  অনেক নোংরামোর শেষে যেন এই নোংরামো না করে।  

যাইহোক , দেশ কিন্তু আগে এগিয়ে হাজার পূর্ণ করেছে কালকে।  আমেরিকার কার্ভ  দেখে গতি মিলিয়ে নিন।  আমাদের কিচ্ছু হবে না বলে চা খেতে বেরিয়ে গিয়ে থু করে করোনা ছুঁড়ে পালিয়ে আসবেন না।  ঘরে থাকুন বেঁচে থাকুন।  

No comments:

Post a Comment