Friday, March 20, 2020

#গো_করোনা_গো ( ২ ) - করোনার আক্রমণের কিছু আগে


ইরানের ডেপুটি হেলথ মিনিস্টারের খবরটা বেশ চিন্তাজনক ছিল।  কিন্তু তার থেকেও চিন্তাজনক ছিল আমেরিকায় হঠাৎ হঠাৎ উস্কে ওঠা রেসিজম নিয়ে আর এখনকার রেসিস্ট প্রেসিডেন্ট নিয়ে।  যেমন আরবরা এককালে সবাই তালিবান ছিল।  ঠিক এখন চাইনিসরা হঠাৎ করে সবাই ক্রনিক রুগী হয়ে উঠতে লাগলো।  সবাই চাইনিস দ্রব্য বহিস্কার করা আরম্ভ করে দিয়েছিলো।  তখনও আমেরিকাতে থাবা বসায়নি করোনা।  অথচ বাদুড়ের সুপ্ নিয়ে সবাই ভয়ঙ্কর ভাবে আলোচনা আরম্ভ করে দিয়েছিলো।  সেই চিরাচরিত “ They eat whatever walks ” আবার নতুন করে ফিরে এসেছিলো।  আর কারা বলছিলো? যারা গোবর খেয়ে প্রায়শ্চিত্ত করে। 

আমি পড়লাম গেরোতে।  পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে কোনো একটা রোগে মানুষ মারা যাচ্ছে বলে , আমি আমার গিন্নির প্রিয় কুইসিন বিবাহ বার্ষিকীর দিনে পরিত্যাগ করবো।  কৈ ইবোলার সময় তো লঙ্কা খাওয়া বন্ধ করিনি। এখানে থাই চিলি বলে যে লঙ্কা সে আসলে আসে দক্ষিণ ও মধ্য আফ্রিকার দেশ গুলি থেকে। তা যতদিন আমার ঘরে আগুন না ধরছে , প্রতিবেশীর কানে “কু” করার কি দরকার আছে।  অনেক দিন ধরে প্ল্যান করেছিলাম বিবাহ বার্ষিকীর দিনে চাইনিস হটপট খেতে যাবো।  

দিনটা বেশ রিমঝিম রিমঝিম ঝুপঝুপ বৃষ্টির দিন ছিল।  ছুটি নিয়ে দুজনে ছেলেকে ডেকেয়ারে রেখে দিয়ে গেলাম খেতে সেজওয়ান হটপট।  দোকানে ঢুকে হাঁ।  পুরো খালি।  
যে কোনো জায়গা  খালি দেখলে ভূতের ভয় লাগে।  কিন্তু এখন "ভয়ের" ভয় লাগলো।  রেস্তোরাঁটি যথেষ্ট নাম করা।  কিন্ত সকলেই পরিত্যাগ করেছে, কয়েক দিনের জন্য।  দোকানের মালিক সাদরে আপ্যায়ন করে বসলো আর আমাদের সুন্দর করে পরিবেশন করলো।  এই ভুলভ্রান্তির শিকার হওয়া নাক বোঁচা চোখ কুৎ-কুৎ দের জন্য আমার "আহারে " বেরিয়ে এলো। 

আমার বেরোলে কি হবে।  পৃথিবী তখন কন্সপিরেসি থিওরিতে মজেছে।  নানা লোকে নানা কিছু বলছে।  হঠাৎ করে Dean Koontz er Eyes of Darkness এর একটা পাতা ভয়ঙ্কর ভাবে ভাইরাল হতে আরম্ভ করলো। জ্বলজ্বল করে লেখা আছে হুয়ান প্রদেশে বানানো ভাইরাস সমস্ত জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। 



আমরাই বা পেছনে পরে থাকবো কেন, হাজার হোক আমরা ভবিষ্যৎ আর  গ্রহ নক্ষত্র কন্ট্রোলে পৃথিবীর কাছে বিশ্বগুরু ( বিশ্বভাট !!) . তার ওপর ধর্ম যদি এই কঠিন সময়ে কিছু প্রমান না করতে পারে , তাহলে ধর্মর কাজ কি ? ত্রাহিমাম ত্রাহিমাম বলে দৌড়াবো আর জগন্নাথ বলবে এই যাহ ধরবো কি করে , তা বললে কি চলে।  মানুষ ভয় আর লোভের জন্যেই তো ভগবানের কাছে যায়। 


তাই শুরু হয়ে গেলো হিন্দুদের অবতারবাদ আর মুসলমানের আল্লার  আদেশ।  এদের দেয় কে জানিনা।  তবে এরা দেয়।  সময় হলেই ভোরে উঠে ভরে ভরে দেয়।  আল্লাহ রামের দয়ায় পড়াশুনা করেছি বলে এদের থেকে এখন WHO কে শুনি।  

হঠাৎ করে এক অদ্ভুত তত্ত্ব এলো যে চাইনিস পপুলেশন কমানোর জন্য নাকি এই ভাইরাস ছড়ানো হয়েছে। যে লোকগুলো ঘুম থেকে উঠে গাঁজা মারে তাদের পক্ষেই বলা সম্ভব।  এই কথাগুলো , কারণ যে দেশে কোটিতে পপুলেশন তাদের ৫ হাজার মেরে কি লাভ শুনি। এইসব ভুলভাল খবর বলার থেকে তাদের দশ দিনে হাসপাতাল বানানোর খবর ছড়ান না।  কাজে দেবে।  নিচে লিংক দিলাম।  


আপাতত থাক….. দেখি পরেরটা কবে লিখতে পারি।  

No comments:

Post a Comment