না
আর নো। একবার বাংলা একবার ইংলিশ। শুধু নেগেটিভিটি।
আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে শুধু না শুনছি। জানলার
ব্লাইন্ডস ধরে ঝুলবো - না , তাহলে জুতো চেবাই - নো, তবে ডাইপার খুলি ? - না, শুধু
একবার রিমোটটা কমোটে ফেলি - নো , দুটো আপ্পুর একটাকে জানলা দিয়ে ছুঁড়ে দি - নো - না
- নো - না। সবকিছুতেই নাবাচক বমি উগলে দেয়
মা। আমি কতবার করে বলি যে নিজের রক্তের মতো
হও - বি পসিটিভ। কিন্তু কোনো লাভ নেই। এ হোক বা বি, মা নেগেটিভ।
আমি
কত ভালো ভালো অপসান দি মা কে। টিভিটা আমার থেকে
অনেক পুরানো। এখন অনেক ভালো ভালো টিভি মার্কেটে
এসে গেছে , তাই আমাকে ওটার ওপর জাম্প করতে দাও।
আমি ছুটে নিয়ে জাম্প করতে গেলেই আমাকে ক্যাচ করে নেয়। আমার থেকে যেকোনো উঁচু মানুষের চেয়ে গন্ধ চেনার ক্ষমতা অনেক বেশি। আমি গন্ধ পাচ্ছি যে রান্নাঘরে কাবার্ডের
মধ্যে কিছু একটা জিনিস চার পাঁচ মাসের মধ্যে পচে যাবে। কিন্তু মা কিছুতেই কাবার্ড খুলতে দেয় না। এখন তো আবার নতুন নতুন ফন্দি ফিকির বানিয়েছে। কি জানি হঠাৎ করে দেখি যা যা খুলে যাচ্ছিলো সেগুলো
আর খোলে না। কিছু একটা দিয়ে আটকে রেখেছে। ঠাম্মার দেওয়া হাতের বালাটা যেদিন টেনে বাঁকিয়ে
দিয়ে খুলে ফেলেছিলাম, সেদিন ভেবেছিলাম আমি ছোটা ভীম। কিন্তু মা যে কুন্তী, সেটা কি করে জানবো। ঠিক ট্যাক্টিকালি আমাকে আটকে দিচ্ছে।
এই
মুহূর্তে আমার জীবনের পথে এগিয়ে যাওয়ার সবথেকে বড় অন্তরায় আমার মা। সব জিনিসে বারণ করলে কি এক্সপ্লোর করা যায়। এপ্রিসিয়েট
করলে তবেই না ইনস্পিরেশন আসে। ইন্সপায়ার টু
ফেল , টু গেট দা ইনোভেশন। কে যেন বলেছিলো এক
গালে থাপ্পড় মারলে আরেক গাল এগিয়ে দাও। আমি
থাপ্পড় খেতে তো বলছি না। আমি বলছি আমি হালুমের
লেজটা ভাঙলে আরেকটা লেজওয়ালা হালুম এনে দাও।
মা
যে এতো বারণ করে , নিজে কি করতো। দাদুর মুখে
শুনেছি মা নাকি সব নতুন জিনিস খুলে দিতো। ভেতরে
কি আছে জানার জন্য। আমি কি ডিফারেন্ট করছি? হাজার হোক তোমার পেটেই তো ছিলাম। কিন্তু না , এখন নাকি কোনো কিছু ভাঙা চলবে না। নাহয় বাদ দিলাম ভাঙার কথা কিন্তু প্রজেক্টাইল মোশন
ক্যালকুলেট করতে তো আমাকে জিনিস ছুড়তেই হবে।
স্প্রিং যে কি ভাবে কাজ করে সেটা জানার জন্যই তো আমি দরজা বন্ধ করে পালিয়ে আসি
, দেখি আবার খুলে গেছে। লেন্থ ব্রেদ হাইট
- সব জিনিসকে এই ক্যাটাগরিতে ফেলে বুঝতে গেলে সেটা তো ধরতে হবে। বাবা তো বলে আগুন গরম কি ঠান্ডা সেটা না ধরলে ও
বুঝবে কেমন করে।
বাবা কিছুটা
সেন্সিটিভ আমার পরিস্থিতির ওপর। বাবা
আসলে পুরুষ তো , বাবা বোঝে কয়েকদিন পর
না থাকবে বাবা, না থাকবে
মা। থাকবে শুধু আমার বন্ধুরা আর টিচার। ডে কেয়ারে
গিয়ে দেখেছিলাম তো নিজে না শিখলে সবার
কাছে ডাউন হয়ে থাকতে হয়। হার্পার , জেসমিন
কত কিছু জানতো। ওদের ডাইপার আবার সেন্টেড ছিল।
জো হাতটা নিয়ে গোল গোল ঘোরাতো। ওর পেরেন্টসরা
আসলে অন্য রকম আওয়াজ বার করতো। কত অ্যাডভান্স। আর আমি এই মায়ের জন্য পিছিয়ে পড়ছি। করতে হয় , নাহলে পিছিয়ে পড়তে হয়।
আমি
শুধু এক্সপেরিমেন্ট উইথ ট্রুথ করি। বল গোল।
গড়িয়ে দিলে থামবে না। কিন্তু আমার ট্যাবটা
চৌকো ওটা ঘষে ঘষে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আমার
হালুম তো না গোল না চৌকো। ওটা নিয়ে আমি করি। তাই ক্যাপচারেবল এক্সট্রা গ্রোথ ধরে দিলাম এক টান। গেলো খুলে , শিখলাম সামথিং পুলড উইথ ফোর্স ফ্রম
এ স্থিতিশীল অবজেক্ট ক্যান বি ওনড এন্ড চেরিশড।
তবেই না এখন রুটি ধরে টান মেরে মুখে ঢোকানোর চেষ্টা করি। আবার ধরো সেদিন , যখন আমি লাইটটা টেনে ফেলে দিয়েছিলাম
, মা সাংঘাতিক চেঁচিয়েছিলো। কিন্তু তখনি তো
শিখেছি মা কে হামি খেতে গেলে চুল ধরে টেনে আনতে হয়। কিন্ত মা কিছুতেই কিছু করতে দেবে না।
পন্ডিত
বাবা মা কে একবার শ্লোক ঝেড়েছিলো , "উদ্যমেন হি সিদ্ধন্তি কার্যানি না মনোরথই
, না হি সুপ্তস্য সিংহস্য প্রবিশন্তি চ মুখে মৃগাহ। " পন্ডিতের মতো কথা আর ভূতের
মতো আচরণ। ফোনে যখন আমার খেলা দেখতে থাকে তখন
,"এই ধরো ধরো। ওই সাবধান। এই খেয়ে ফেলবে। "
করতে থাকে। মানে ইন্ডাইরেক্টলি মা কে
বলে "নো " .বলতে। এদের পড়াশুনা করতে
কে যে শিখিয়েছে কে জানে। আমার মতো ঘর পুঁছতেও
পারে না।
এখনো
নম্বরগুলো শেখা হয়নি , তাই হাইট বলতে পারিনা।
আমি তাই চেষ্টা করি আমার থেকে উঁচু জিনিস ধরার। প্রথমে বুকে হাঁটতাম , তখন হরাইজন
ছিল ছোট। দিগন্ত বড়ো হলো যখন হামা দিতে শিখলাম। এখন তো ধরে ধরে হাঁটি। তাই আমার ভিউপয়েন্ট অনেক বড়ো তাই নিজেকে মাপার জন্য
আমার থেকে উঁচু উঁচু জিনিসের দিকে নজর দিই।
টেবিলের ওপর কি আছে তা দেখার চেষ্টা করি।
হোক পর্বত উঁচু , হতে পারে এ জন্মে উচ্চতাতে মাত পারবো না দিতে , তবু এই ছোটো
ছোটো হাত দিয়ে , নেবো ওই শৃঙ্গটাকে জিতে। কিন্তু শৃঙ্গে হাত দেওয়ার আগেই , প্রথমে ,
"নো - ও - ও - ও " করে নিশির ডাক শুনি।
আর তার পর কোমরে চাপ পরে আর আমি উড়ি।
কিন্তু
বাবার মতো আমার পারসিভারেন্স চূড়ান্ত , দাদুর
ভাষায় ডগেডনেস। আমি যতটা পড়ি , ততটা বুকমার্ক
করে রাখি। আজ বেঁধেছিস মোরে , কাল যখন থাকবি না তোরা , মারবো
আবার লাথি , ওই বন্ধ দোরে। অনেকদিন চেষ্টা
করছিলাম ওই একটা বন্ধ টেবিল খুলতে। যখন দেখলাম
অনেক টানাটানি করেও যখন কিছুতেই খোলা যাচ্ছে না।
তখন হাতলই ভেঙে দিলাম। তাই চেষ্টার
আমার অন্ত নেই। বিরক্ত আমি হইনা। উদ্যেশ্য আমার স্থির। আর যৌবন আমার চঞ্চল। তাই যতই বাঁধা দাও না কেন , যতই "না" বলো না কেন,
যতই আমাকে নিচে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করো না কেন , অঙ্কুরোদ্গম হবেই। হ্যা ভবিষ্যতে ছায়া না চাইলে, পিষেও দিতে পারো আর চাইলে সার দাও। এই না-না-না-না- শুনতে শুনতে আমার কান পচে গেছে। বি ইয়েস ম্যান এন্ড বিহেভ পজিটিভলি। এই বলে রাখলাম।
No comments:
Post a Comment