Monday, April 2, 2018

হাবিজাবি - প্রথম হাজার





ঠিক এখনই 
আমার মাথায় কি চলছে? একটা খাবার অর্ডার করেছি।  বলেছে পনেরো মিনিট  অপেক্ষা করো। করছি। অপেক্ষা এক অদ্ভুত যন্ত্রনা । ছোটবেলা থেকেই সেই হাঁ করে অপেক্ষা করতে করতে জীবন
 এগিয়ে যাচ্ছে।  প্রথমে খাবারে অপেক্ষা , তারপর খেলার অপেক্ষা , তার পর রেজাল্টের অপেক্ষা , তারপর প্রথম প্রেমে চিৎপটাং হয়ে লেখা চিঠির পাল্টা উত্তরের অপেক্ষা, তারপর গার্লফ্রেন্ডের জন্য অপেক্ষা, এখন বৌয়ের জন্য চেঞ্জিং রুমের সামনে অপেক্ষা।  অপেক্ষার কোনো শেষ নেই ।  সেই জন্যই কোনো মহাপুরুষ বলে গেছে স্মার্টফোন শপিং মলে পুরুষের সবথেকে বড় বন্ধু।  বন্ধু না শত্রু সেটা বোঝা বেশ সমস্যা।  বিশেষতঃ মানুষের মধ্যে।  আজ যেটা মিষ্টি কাল সেটা ঝাল
 টিকে থাকে না কিছুই চিরকাল ।  আজ যে বন্ধু গলা জড়িয়ে ধরছে, কাল সে -ইই গলা জড়িয়ে ধরে এমন এক মোচড় দেবে যে যাবে ঘাড় মটকে অক্কা ।  কয়েকদিন আগেই কোথায় একটা যেন শুনছিলাম একজন নাকি চুল কাটাতে গিয়ে মেসেজ করাচ্ছিল নাপিতকে দিয়ে ।  ওই ঘাড় ধরে একটা ফট করার ফাটিয়ে দেয় , সেটাই করে যখন বাড়ি ফিরেছে তখন শুরু হলো ঘাড়ে ব্যাথা , পরে বমি, তারপর হাসপাতাল ।  সব মিলিয়ে কেসটা হলো কোনো একটা নার্ভ গেছে ছিঁড়ে যেটা জোড়া লাগতে বেশ সমস্যা।  এরকম কত্ত ঘটনায় ঘটতে থাকে দিন রাতে।  শ্যামনগরের সেই পাগলটাকে অনেকেই চেনে যে কাউকে কোনো রকম
ডিসটার্ব করত
 না । রোজ  চুলে জল লাগিয়ে, ব্যাকব্রাশ করে, এসে সোজযা সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে সামনে বসে পড়তো ।  নে কি করবি কর ।  গান্ধীজি জিন্দাবাদ ।  পুলিশ এসে হাঁ ।  প্যাঁদালেও প্রতিবাদ নেই।  এবার তাহলে কি করবো।  প্যাঁদানো প্রাকটিস করবো, আবার কি করবো।  যারা উল্টে উত্তর দেয়না তারাই তো আসল টার্গেট।  উল্টে উত্তর দেওয়া লোকেদের থেকে বাবা দূরে থেকো।  দু ধরণের লোকেরা উল্টে উত্তর দেয়।  এক যাদের হেব্বি জ্ঞান , এরা জানে কি করে সমস্যা কে ঘুম পাড়িয়ে পাঁচিল টপকে পালিয়ে আসতে, ও সমস্যা যারা দিয়েছিলো তাদের বাগানেই কার্তিক ফেলতে ।  আর দ্বিতীয় তারা,  যারা জানে যে কারা জানে ।  মানে হেব্বি
 ব্যাক-আপ সম্পন্ন মানুষ।  তাই সাবধান ।  জনকল্যাণ স্বার্থেও এইসমস্ত লোকগুলোর থেকে দূরে থাকা ভালো ।  যদিও জনকল্যাণ ব্যাপারটা এখন একটা খেলো ফেসবুক কমেন্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে আর হ্যাঁ মোমবাতি জ্বালানোকে ভুলে যেতে পারি কি করে ।  এই মোমবাতি প্যারাফিন দিয়ে তৈরী না আসল মোম দিয়ে তৈরী জানিনা বা জানতেও পারিনা।  আসল মোম  কিন্তু কানেও হয়।  মানে আমরা নিজেরাই মোম তৈরী করতে পারি।  Shrek  মুভির সেই সিনটা মনে আছে তো , সেই কান থেকে মোম বার করে সলতে লাগিয়ে  জ্বালিয়ে দিলো ।  ছোটবেলায় অনেক মোমবাতি ব্যবহার হতো যখন কারেন্ট অফ হয়ে যেত।  আজকাল আর কারেন্ট অফ বিশেষ হয় না।  
কিন্তু যখন হয় তখন আগেকার মতো চুপ করার বসে থাকা হয় না ।  এখন মোবাইল আছে  সাথে।  মোবাইলের পেছনে এখন টর্চ লাইটও থাকে, সেই লাইট যদিও জ্বালানোর দরকার শুধু কোথায় বসবো সেটা খুঁজে নেওয়ার জন্য।  তারপর ফেসবুক হোয়াটস্যাপ তো আছেই।  আগে সময় কাটানোর জন্য ছিল "আমি-এবং-আমি" , যদি না অনেক "আমার" এসে জুড়তো।  আর জুড়লেই শুরু হতে অন্তাক্ষরী।  আগে ভালো লাগতো, এখন বেশ বোর লাগে।  কারণ "থ" দিয়ে গান শুরু হয় না কিন্তু শেষ হয়।  যারা অন্তাক্ষরী জেতে , তারা কখনোই ভালো গায়ক নয় , তারা আসলে বেশ স্কিলফুল।  কি করে লোককে একই ছকে ফেলে দেওয়া যায় সেটা
তারা দারুণ পারে।
 ছক করা কিন্তু সবাই পারেনা। ছকে ফেলে মেয়ে তোলা বেশ কঠিন।  আর যারা এই মেয়ে তুলতে চায়, তাদের সবথেকে বড় সমস্যা হলো মেয়ে উঠতে চায়না।  মেয়েরা কি বসে থাকে নাকি।  যদিও পৃথিবীর সমস্ত জীবেদের মধ্যে দেখা গেছে পুরুষরাই কর্মী।  যেমন ধর মৌমাছি।  এই এক্সাম্পল মনে হয় হয় সবাই দেয়।  তার থেকে এমন কিছু একটা ধরা যাক যা খুবই আনকমন।  আচ্ছা আমরা এতো ইউনিক এর পেছনে দৌড়ে মরি কেন ? রোজ সকালে সূর্য যখন ওঠে তখন তো আর ইউনিক ভাবে ওঠে না।  সেই এক ঘেঁয়ে টুকি টুকি খেলা।  এই টুকি টুকি খেলাটা বড় আজব।  যখন ছোটো ছিলাম তখন বেশ ভালো লাগতো।  কিন্তু এখন বড় হয়েছি এখন আরও ভালো লাগে।  যদিও এটা ছোটদের খেলা।  মনে হয় এখন বড় নয়।  বুড়ো হয়ে গেছি , বা বেশ কিছুটা বুড়ো হয়ে গেছি।  বলে না সময়ের সাথে সাথে ইচ্ছা
ও ইন্টারেস্ট উল্টো পথে হাঁটে।
 কিন্তু বলে নাকি মানুষ বয়সে বুড়ো হয় না।  মনে বুড়ো হয়।  আমি যদি ইচ্ছা করি যে জোয়ান থাকবো তাহলে হয়তো কেউ আমাকে বুড়ো করতে পারবে না।  বেডপ্যানে পটি করতে করতেও নার্সকে চোখ মারবো।  কিন্তু তাতে কেউ কি আমায় দাবাং দাদু বলবে নাকি বুড়ো ভাম বলবে? ভাম জিনিসটা কখনো নড়তে চড়তে দেখিনি।  সবসময় দেখেছি পাড়ার রাস্তায় মেরে ঝোলানো আছে।  খানিকটা ভোঁদড়ের মতো দেখতে।  এই
ভামের বয়স বেড়ে গেলে ঠিক কি হয় আমার জানা নেই।
 আর বুড়ো দাদুর সাথে ভামেদের যে কি মিল আছে সেটা জানতেও মন বড়োই আগ্রহী।  এখন বলতে পারি অনেক কিছুতেই তো আগ্রহ আছে দাদা।  স্পেস স্টেশনে ভারশূন্য অবস্থায় চুলকালে কি আরাম লাগে ?  সে আগ্রহ মেটাবে কে ? লোকে বলে প্রথম শিক্ষক মা বাবা আর তারপর বই, এখন ইন্টারনেট। এই ইন্টারনেট তো ভুলে ভরা।  যত ফালতু লোক গুডনাইট আর গুডমর্নিং লেখার ফাঁকে ফাঁকে নিজেদের মনগড়া কিছু জিনিস লিখে দেয়।  এখন ইন্টারনেট এমন একটা জিনিস হয়ে দাঁড়িয়েছে যে সেই ভিড়ের মাঝে গালাগালি দিয়ে  মব কে ভিক্টিম বানানোতেই মানুষের ইন্টারেস্ট।  কে কি লিখলো কি বলতে চাই ছিল তাতে কারো কিছু এসে যায় না।  
আসলে কখনোই কারোর কিছুতে এসে যায় না যতক্ষণ না নিজের গায়ে আগুন লাগে।  এই যে গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে তীব্র আলোচনা , জল্পনা কল্পনা তার আসল কারণটা কিগোদা মানুষ গুলোর বাড়ি সমুদ্রের ধারে।  ঘর থেকে বেরিয়ে সান বাথ নিয়ে আবার ঘরে এসে এসিতে বসা লোকজনের বাড়ি এখন জলের তলায় তলিয়ে দেওয়ার জন্য প্রকৃতি উঠে পরে লেগেছে।  তাই তারাও বিশ্বকে নাচিয়ে চলেছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং কম করার জন্য।  কিন্তু গরু যে গ্লোবাল ওয়ার্মিং বন্ধ করতে পারে সে নিয়ে বিশ্বের সবথেকে পুরানো এক সভ্য
দেশের যা বিশ্বাস তা ভাবার বাইরে।
 আমি তো ভাবতেই পারিনা যে এরাই নাকি বিশ্বকে বিজ্ঞান শিখিয়েছিলো।  আসলে জ্ঞান একটা পাতলা পায়খানার মতো।  প্রচুর ভালো খেলে হেগে বের করে দিয়ে তবে শান্তি পাওয়া যায়।  আর বীরবল বা গোপাল ভাঁড় বলেছেন , এই শান্তি হচ্ছে সর্বোচ্চ শান্তি।  পেলেই প্রাপ্তির কারণ মানুষ ভুলে যায়।  কয়েকদিন আগের ডায়রিয়া মনে আছে।  কিন্তু তার কারণ যে চর্ব্য-চোষ্য –লেহ্য-পেয় আছে সেটা মানুষ ভুলে মেরে দেয়।  মানুষের সবথেকে বড়  ক্ষমতা এই ভুলে যাওয়া।  মানুষ যদি ভুলতে না পারে, তাহলে জীবনে কিছুতেই এগোতে পারবেনা।  অনেকে অনেক কিছু ভাবে এই ভুলে যাওয়া কে রোখার চেষ্টা করেছে।  ডকুমেন্টেশন যার নাম, কিন্তু সব কি আর ডকুমেন্টে ফেলা যায়?  ও পাড়ার চিমলি কে দেখে এখানের চিপকের মনে কি হয়েছে সেটা লিখে রাখতে গেলে ভাষাই তো পাওয়া যায় না।  ব্যাঙের আওয়াজ শব্দে লিখতে গিয়ে কেউ লিখেছে , ‘ঘ্যাঙর ঘ্যাং ‘ কেউ লিখেছে ‘রিবিট রিবিট’ তাই ডকুমেন্টেশন কখনোই সম্ভব নয় যখন জীবনকে লিখে রাখতে হয়।  



---------------------------------১০০০--------------------------------------------

No comments:

Post a Comment