Tuesday, November 27, 2018

৫২) আধ্যানের ডায়েরি - জাম্প জাম্প




সেদিন খুব রাগ হয়ে গেছিলো।  যদি গ্রোথ মাইলস্টোনই হয় তাহলে এতো বারণ করা , এতো রাগ ঝাল , এতো তেল দেখানো কেন বাপু।  নিচের তলার উইচদের থেকে কমপ্লেন আসার পর থেকে বাবা মা যেন ক্ষেপে উঠেছে।  আমি একটু জাম্প করলেই বাবা লায়ন এর মতো রোর করছে, আর মা মাঙ্কির মতো খ্যাঁক খ্যাঁক করে তেড়ে আসছে।  অথচ টিভিতে বেজে চলেছে টেন লিটিল মাঙ্কি জাম্পিং অন দা বেড।  যতবার দেখবো , ততবার করবো তবেই না ভীত মজবুত হবে।  তবেই না আমি বড় হবো।  তবে কেন এতো সমস্যা।

সেদিন সারাদিন জাম্প করিনি রাগ করে।  খুব রেগে গেছিলাম, কারণ আমি একবার জাম্প করার পরেই বাবা ধরে নিয়ে বসিয়ে চোখ দেখিয়ে চিৎকার করেছিল।  যদিও আমি এখনো ঠিক ঠাক এক্সপ্রেশন গুলো আলাদা করতে পারিনা।  কিন্ত সেদিন কেন জানিনা বুঝতে পেরেছিলাম সেটা মজার এক্সপ্রেশান নয়।  তার ওপর আমার আবার হাত ধরে ঝাঁকিয়ে দিয়েছিলো। সে ঝাঁকুনিতে বুঝতে পেরেছিলাম হাওয়া ভালো নয়।  অগত্যা , গোঁজ মেরে বসে থাকা।

আমি যখন খেলি তখন বাবা মা এর হাজার ঝামেলা।  আমাকে সরিয়ে দিতে পারলেই যেন বেঁচে যায়।  আর আমি যদি কিছু না করি, তাহলে অন্য সমস্যা , তখন সবকিছু ছেড়ে আমাকে টানতে থাকে।  সেদিন কেসটাও তাই হয়েছিল।  চুপচাপ নিজের মতো খেলছিলাম।  হঠাৎ করে দেখি, তুলে টুলে নিয়ে গিয়ে জামা টামা পরিয়ে টরিয়ে আমাকে গাড়িতে নিয়ে গিয়ে তুলল।  আমি নীরব।  সারা রাস্তা বাবার গিলটি ফিলিংস বেরিয়ে আসছিলো এ - বি - সি -ডি গান হয়ে।  আমি পাত্তা না দিয়ে চুপ করে বসে ছিলাম।

আমিও তো জানি , এর পর কি হতে চলেছে।  সেই নিয়ে যাবে কোনো একটা গ্রসারি স্টোরে। একটা কিছু খেলনা হাতে ধরিয়ে দেবে।  কার্টে বসে বসে আমি খেলতে থাকবো সেটা নিয়ে।  তারপর বেরোনোর সময় সেটা কাউন্টারের লোকটাকে দিয়ে বলবে , "আই ডোন্ট নিড দিস।" ওরে বাবা, তোমার চাইনা বলে কি আমারও দরকার নেই ওগুলো।  মানছি আমি ডে কেয়ারে যাই, মানছি আমার জন্য মিলিয়ন্স অফ ডলার খরচ হয় কিন্তু এটা মানতে পারছি না যে , আই হ্যাভ এনাফ।  যত খেলবো তত তো শিখবো।  আর শিখতে গেলে কি করতে হবে , প্রথমে খেলনা গুলোকে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে হবে, তারপর একটু চেটে টেটে দেখতে হবে , তারপর একটু ছুঁড়ে দিয়ে দেখতে হবে।  তবেই না গিয়ে শিখবো।  কিন্ত না , কার্টে বসে যা নিয়ে খেলতে শুরু করি তাই উধাও হয়ে যায়।  আর কয়েকদিন পর যখন ঘুরে আসি , তখন দেখি দোকান থেকেও সেটা গায়েব হয়ে গেছে। তার থেকে নাই বা নিয়ে যেতে পারো আমাকে।  কিন্তু না , ট্যাঁকে গুঁজে সবসময় এখান থেকে ওখান আর ওখান থেকে সেখান।

গাড়িটা থেমে গেলো একদম অন্য ধরণের এক ফাঁকা জায়গায়।  কি জ্বালাতন, এই নতুন নতুন জায়গায় বাজার করা মায়ের এক বিচ্ছিরি হ্যাবিট। দোকানগুলোরও সমস্যা আছে , সবার কার্ট এর সাইজ আলাদা।  আর আমার বসার কমফোর্ট লেভেল আলাদা।  কোনটা স্মুদ চলে কোনটা খটখটে।  আমি অনেক কষ্ট করে কিছু কার্ট মনের কমফোর্ট জোনে ঢুকিয়ে রেখেছি।  আবার মনে হয় এটাকেও ঢোকাতে হবে।

কিন্তু না।  না - না - না।  আমাকে বিশাল অবাক করে দিয়ে একটা বিশাল জায়গায় নিয়ে গেলো যেখানে আমার মতোই কচিকাঁচারা খেলছে।  আমি ওই বিশাল জায়গায় ঢুকেই দেখতে পারলাম বিশাল প্লে এরিয়াটাকে।  বল পিট্ , স্লাইড , ক্লাইম্বার , স্প্রিং রাইডার্স , মেরি গো রাউন্ড , স্পঞ্জ পিট্ কত কি আছে।  মায়ের হাত ছেড়ে দৌড়োতে যাবো, বাবা কোলে তুলে নিয়ে একটা কাউন্টারে গিয়ে একটা লোকের সাথে কত কথা বলতে লাগলো।  আমি হাত পা ছুঁড়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বিশেষ লাভ হলো না।

মা আমার শ্যু খুলিয়ে , একটা সবুজ সক্স পরিয়ে দিলো।  মা ও পড়লো।  আমি দৌড়ে প্লে এরিয়া যাওয়ার আগে মা ধরে নিয়ে গেলো ওপরে আরেকটা জায়গায়।  অনেকটা বড় জায়গা।  আর সবাই লাফাচ্ছে।  আমার ভেতর থেকে কি আনন্দই না হলো।  আবার চোখে খুশির কান্না বেরিয়ে এলো।  এই মা বাবাই আমাকে সবসময় জাম্প করতে বারণ করে।  আর এখানে নিয়ে এসেছে শুধু জাম্প জাম্প করতে।  থ্যাংক কিউ মামি , থ্যাংক ইউ ড্যাডি।

জায়গাটা হেব্বি মজাদার।  গোল গোল খাপ করা আছে।  যাও গিয়ে লাফাও।  ওই একটা জায়গাতেই দেখলাম বড়রাও লাফায়।  আর বড় শুধু না , মায়ের মতো বড়রাও।  আমার মতো ছোটরাও ছিল কিন্তু তাদের সংখ্যা কম।  আমি প্রথমে তাদের সাথে জাম্প করতে গেলাম কিন্তু এস ইউসুয়াল আমাকে কেউ পাত্তা দিলো না।  আমিও তখন নিজেই জাম্প করতে লাগলাম মায়ের সাথে।  মায়ের সাথে জাম্প কি আর করতে পারি। মা এসে পড়তেই আমি ছিটকে পড়ে যাচ্ছিলাম  তখন মা আবার তুলে দিচ্ছিলো।  বাবা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাঁদার মতো দেখছিলো।

এই জায়গাটাকে পরে জানলাম জাম্প পার্ক বলে।  আর এই এক একটাকে বলে ট্রাম্পোলিন।  এই ট্রাম্পোলিনে জাম্প করতে কিন্তু অন্য জায়গার মতো কষ্ট করতে হয় না।  একটু জাম্প করলেই আপনা থেকে জাম্প হতে থাকবে।  থামানোই কঠিন। বেশ জাম্প জাম্প করতে করতে হঠাৎ দেখি একটা ঘেরা জায়গায় সবাই বল খেলতে খেলতে জাম্প করছে।  আমিও বল - বল করতে করতে ছুটে গেলাম।  কিন্তু দরজাতেই আমাকে আটকে দিলো।  আমি নাকি খেলার জন্য অতো বড় হয়নি। ওখানে সব বড়রা খেলছিল।  আমি অনেক চেষ্টা করলাম ঢোকার কিন্তু কেও সুযোগ ছাড়লো না।

আমিও তখন পাশের স্পঞ্জ পিট্ এ গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লাম।  স্পঞ্জ পিট টা হেব্বি।  মাও আমার সাথে সাথে ঝাঁপিয়ে পড়লো।  পড়লে হবে কি।  আমার মতো কি লাইটওয়েট।  কিছুতেই উঠতে পারেনা।  আর যত উঠতে পারছে না আমিও ঝাঁপিয়ে পরে আরো মা কে নিচে চেপে ধরছি।  হেব্বি লাগছিলো।  কিন্তু মা কে উঠতেই হলো আর উঠতে উঠতে হঠাৎ করে সব লাইট বন্ধ হয়ে গেলো।  সব লাইট , যেখানে যা ছিল সব লাইট। তারপর চিক চিক করে কিছু আলো জ্বলে উঠলো কিন্তু সব নয়।  দেখা যাচ্ছিলো সবকিছু কিন্তু বেশি আলোও ছিল না।  যারা সাদা জামা পরেছিল তাদের জামা দেখা যাচ্ছিলো আর সক্সগুলো।  বাকি আর কিছুই দেখা যাচ্ছিলো না।  কিন্তু মা মুখের মধ্যে কি পুড়েছিল জানিনা , মায়ের টিথ দেখা যাচ্ছিলো।  কি অদ্ভুত দেখতে লাগছিলো জায়গাটা।  কিন্তু হেব্বি মজা করেছি।

 কিছুক্ষন পর আর দম পাচ্ছিলাম না কিন্তু ঘোর লেগে গেছিলো।  থামতে ইচ্ছা করছিলো না।  লাফিয়েই চলছিলাম।  আর বার বার চেষ্টা করছিলাম ওই জায়গাটায় ঢোকার যেখানে বড়রা বল নিয়ে লাফাচ্ছিলো।  কিন্তু বাবা ছ্যাঁচরাতে ছ্যাঁচরাতে নিয়ে আসছিলো।  কি মানুষ রে বাবা।  কি আর বলবো।  যদিও কয়েকদিনের মধ্যেই আমি শোধ তুলে নিয়েছি, যখন বাবার সাথে এলাম।
--------
আগের দিন মায়ের সাথে জাম্প করছিলাম বাবা দেখছিলো।  কিন্ত এবার বাবার সাথে জাম্প করার পালা।  এবার বাবা আর আমি দুজনেই সাদা গেঞ্জি পরে এসেছিলাম যাতে আমাদের দুজনকেই অন্ধকারে দেখা যায়।  আমার যত এরকম লাফালাফির খেলা আছে সবই বাবার সাথে।  কিন্তু এই খেলাটাতে দেখলাম বাবা একটা ঢ্যাঁড়স।  লাফাতেই পারে না।  আর লাফালে সারা পৃথিবী কাঁপতে থাকে।  কিছুক্ষন আমার পেছন পেছন লাফিয়ে লাফিয়ে এলো।  কিন্তু তারপর থেকে লং মার্চ।  লাফালোই না।  শুধু বুলি দিয়ে গেলো মায়ের সামনে।  মাঝে মাঝে আমার সাথে এসে লাফাতে গেলো তাতে কি হলো আমি গিয়ে ছিটকে ছিটকে পড়তে লাগলাম আর ইন্টারেস্টটা চলে যেতে লাগলো ওই বলপিটের দিকে। যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই বাবা ছ্যাঁচরা - ছেঁচড়ি করছে।  হেব্বি রাগ হয়ে গেলো,  শোধ নিতে নিয়ে গেলাম স্পঞ্জ পিটের কাছে।

এই স্পঞ্জ পিট্ টা একটু অন্য ধরণের।  এক দিক থেকে গড়িয়ে পড়তে হয় স্পঞ্জ এর মধ্যে তার পর বেশ কিছুটা স্পঞ্জ পেরিয়ে  আর এক দিক থেকে বেরিয়ে আসতে  হয়।  আমি দেখলাম বাবা আসছে না।  এদিকে আমি একবার গড়িয়ে পরে গেছি।  ওই দিক থেকে ওঠার নিয়ম নেই।  আর যদি আমি অন্য দিক দিয়ে বেরিয়ে আসি তাহলে বাবা আর ব্যাপারটা সামাল দিতে উঠবে না।  তাই আমি উল্টো চাল চেলে আবার উল্টো দিক দিয়ে ওঠার চেষ্টা করলাম।  তাতে কি হলো , যারা ঝাঁপ দিতে এসেছিলো তারা পর পর আটকে গেলো।  কেউ ঝাঁপাতে পারছে না, কারণ আমি তখন স্লাইড বেয়ে উপরে উঠছি। এই সময় বাকি সমস্ত বাচ্চার সময় বাঁচাতে আমার পিতৃদেব আমাকে নিয়ে দিলেন এক বিশাল ঝাঁপ স্পন্জপিটের মধ্যে। যেমন ভেবেছিলাম ঠিক তাই হলো।  মা উঠতে পারছিলো না বলে হেব্বি খিল্লি করছিলো এবার দ্যাখ কেমন লাগে।  উঠতেই পারছিলো না।  অনেককখন চেস্ট চরিত্র করে যখন অন্য দিকে গিয়ে হাজির হলো তখন একটা পায়ের সক্স হাতে।  পুরো নাকানি চোবানি খেয়ে বাবার অবস্থা দেখার মতো ছিল।

যাইহোক , এই ট্র্যাম্পলিনে ঘুরে এসে বাবা মা কে মাফ করে দিয়েছি।  এখন বুঝতে পারছি উইচদের থেকে আমাকে বাঁচাতে আর আমার ডেভেলপমেন্টাল মাইলস্টোন বজায় রাখতে বাবা মা ঐরকম বকে , এবং তারপর জাম্প জাম্প করতে নিয়ে যায়। হাজার হোক তারাও তো জানে হাউ ফান ইট ইস টু জাম্প ইন জয়।  সামনে ঠান্ডা আসছে।  বাড়ি থেকে বেরোনোর উপায় নেই তাই জাম্প জাম্প -আবার জাম্প জাম্প - আবার জাম্প জাম্প। 



আধ্যানের ডায়েরি



Friday, November 23, 2018

পরকীয়ার ঠিক আগে



দিচ্ছে তো নেবো না কেন ? আমি কি চেয়েছি।  অবশ্যই , চাইনি তা তো নয়।  ফ্রি জিনিস কে না চায়।  নো স্ট্রিং এটাচড।  যদি সংসার চেয়ে বসে।  ধুর , চাইবে না।  সবার পোঁদেই গু।  কিন্তু মেয়েদের বিশ্বাস করে লাভ কি ? কিন্তু গিন্নির বিশ্বাস ভেঙেই বা লাভ টা কি ? বিশ্বাস ভেঙেছি সেটা না জানলেই হলো।  জানাবে কে ? আমি।  না না আমি কেন নিজের পেছনে বাঁশ নেবো।  কে জানে , মাঝে মাঝে তো ভালোই লাগে।  কোনটা ? এই ছোঁকছোঁকানি।  না না বৌ কে।  ভালো লাগে বলেই তো সঙ্গে আছি।  আর ছাড়তে ইচ্ছা করছে না।  কিন্তু একটা ভুলে সব কিছু ওলোট পালট হয়ে যেতে পারে।  কিন্তু ওলোট পালট হতে গেলে তো ধরা পড়তে হবে।  ধরা পড়লে পুরো কেস।  কিন্তু ধরা পড়লে তো দুজনেই ধরা পড়বো।  আর আমি তো পুরুষ , চামড়ায় কিছুই টেকে না।  কিন্তু যদি ও ধরা পরে গিয়ে কেসটা ভয়ঙ্কর লেভেলে চলে যায়।  আর আমার ঘাড়ে চেপে বসে।  নাহ।  এসবে লাভ নেই।  তার থেকে ইন্টারনেটই ভালো।  কয়েক সেকেন্ডের তো ব্যাপার। তারপরেই তো আবার মন ঘুরে যায় সংসারে।  ঐটুকু সময় আটকে দিলেই তো রাম লেভেলের কিছু একটা হয়ে থাকবো।  কিন্তু কৃষ্ণ তো টিকে আছে যুগের পর যুগ।  এসব ফালতু ব্যাপার।  মনের ডিমান্ড আলাদা। মন না মেলালেই হলো।  কিন্ত শরীর। আহা , থরে থরে সাজানো খাবার।  খাও প্রাণ ভরে , আর বার করে দাও পরের দিন ভোরে।  কিন্তু যদি সেই ভোর হতে অনেক দেরি হয়ে যায়।  চরিত্র নিয়ে টানাটানি।  চরিত্র আবার কি ? লোকের টাকা মেরে দেওয়াও তো চরিত্র হীনতা।  ফেক মেডিকেল বিল তো সাবমিট করেই চলেছি।  সে আর এ কি এক নাকি।  বিশ্বাস , বিশ্বাস , বিশ্বাস।  ভেঙে গেলে জোড়া যায় মন্দির মসজিদ, ভাঙা প্রাণ ভাঙা মন যায়না।  কি হবে জুড়ে।  যদি কারো সাথে শরীর মেলালে কারো মন ভাঙে , তাহলে সে মনে বাস করাটাই অসুবিধা।  আমার মন অনেক বড় , অনেক মেয়ে ধরে।  আর আমি তো আর যেচে কিছু করতে যাচ্ছি না।  আঃ , কে আগে এগিয়েছে সেটা কি বড় প্রশ্ন।  না নিশ্চয় না।  তেল আর আগুনের মধ্যে তো সম্পর্ক আছে রে বাবা।  শুধু তো এগিয়েছিলাম , আমি , আমি হয়ে।  আমার কি কোনো উদ্যেশ্য ছিল না কি কিছু করার। পটে গেলো তো আমি কি করবো।  এরকম তো অনেকেই পটতে পারে।  তাহলে কি সবার সাথে।  না না সেটা আবার হয় নাকি।  আমার চয়েস বলে একটা ব্যাপার আছে তো।  কিসের চয়েস?  শরীর তো সবার সমান।  সে আবার হয় না কি ? চিকেন তো চিকেন কিন্তু রেসিপি গুলো আলাদা।  কিচ্ছু হবে না , এগিয়ে যাও।  মন না জুড়লেই হলো।  কিন্তু মন যদি আবার খাই খাই করে?  মন যদি নতুন স্বাদটাকে বার বার খেয়ে পুরানো করতে চায়।  মন যদি বলে পুরাতন যাক ভেসে যাক।  মন চাইতেই পারে।  কিন্তু মনকে সব সময় পাত্তা দিলে চলে?  এগজ্যাক্টলি। তাহলে মনকে এবার বশে আনো , শরীরের দিকে তাকাতে বারণ করো।  কিন্তু শরীর যদি হেলে পরা ইংরেজি আটের মতো হয় তবে? তখন তো আর বশ মানছে না।  কিন্তু সে তো বৌ এরও ছিল।  সময়ে সবই আলগা হবে।  কিন্তু  টিকে থাকবে ব্রেকফাস্টে লুচি , রবিবারের মাংস , বিকালের চা , সিঁদুরখেলায় লাল শাড়ি , পপকর্ন সাথে রাতের প্রাইম টাইম শো , সমাজের কাছে লাথি খেয়ে “ওঁয়া” বলে বুকে মুখ লুকানো , লক্ষীর ভান্ডার। .. নাঃ , হলো না , এবারেও হাত তুলে দি বরং।  শালা বিয়ের আগে মেয়ে জুটতো না।  বিয়ের পরে লাইন লেগে গেছে।  সেফ এন্ড সিকিওর কিনা।  আর পুরুষ তো বয়স বাড়লে ক্যালানে থেকে ওহ মাই গড, হতে থাকে।  সময়ে কেন এই ঢল নামেনি।  সময় কি গেছে নাকি।  সময় কাকে বলে।  যেটা আসে , যায় , আবার আসে , আবার যায়।  কিন্তু সুযোগ কি সব সময় আসে।  সুযোগের সদ্ব্যবহার করাটাই তো জীবনের একমাত্র শিক্ষা।  আজ যখন খাবার মুখের কাছে এসে , “প্লিস খাও ” বলে লাফাচ্ছে, তখন বাইরের লক্ষী বাইরের ঘরে রেখে তো দেওয়াই যায়।  ঘরে না ঢুকলেই হলো।  আর ফেলে না দিলেই হলো।  দুর্ভিক্ষ তো এসেই মানুষের জীবনে।  তখন না হয় এই স্বাদের ঢেকুর তুলবো।  নাহ ছেড়ে দেওয়া ঠিক হবে না।  সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।  শেখানো তো কম হয়নি।  তাহলে এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করলে মানুষের অপমান তো হয়।  মনটা ভেঙে যাবে তার।  হয়তো অপমান বোধ করবে।  সে সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে তো গোপনে এগিয়েছিল আমার গোপন জীবন আলো করতে। সে তো জানে , সে তো জানে আমি বিবাহিত।  সে তো এই পবিত্র বন্ধন ভাঙতে চায়নি।  তাহলে শুধু ভয়ে পিছিয়ে যাবো।  ধরিয়ে দেওয়ার ভয়ে তো সে ধরা পড়তে চায়নি।  তাহলে কেন, আমি পিছিয়ে যাবো।  উফ কি দোটানা।  দু নৌকায় পা দিয়ে চলা যে কি ভয়ঙ্কর ব্যাপার সেটা সবাই জানে।  কিন্তু এটা তো কিত্ কিত্ খেলা। আচ্ছা অন্য ভাবে ভেবে দেখলে হয় না।  যদি আমার গিন্নি সমমত পোষণ করতো।  প্রকৃতি নিজেই ছেলেদের পলিগ্যামি অপ্প্রভ করেছে।  তার  এতো পুরুষের দরকার নেই।  কিন্তু মেয়েরাও তো সমান মত পোষণ করে মস্তিষ্কে। তাদেরও তো ইচ্ছা করে অন্য পুরুষের সঙ্গে পাওয়ার।  তারা তো ছেলেদের মতোই ঝাড়ি মারে।  যদি সে গিয়ে হাজির হয় একটা গোপন ঘরে।  বা আমাদের বেডরুমেই আরেকটা আমার মতোই পুরুষ এসে ঢোকে।  পেছনে দরজা বন্ধ হয়ে যায়। দুটো নগ্ন শরীর একে অপরকে পিষ্ট করে ঘরে ছড়িয়ে দেয় পরিমল।  এই খাট , এই বিছানা , এই আয়নার সামনে , ওই সোফাতে , ওই লাভসীটে , লেগে থাকে আনন্দের ঘাম।  আর শেষ হলে নো স্ট্রিং এটাচ্ড বলে বেরিয়ে আসে ছেলেটা।  আর তারপর সেই বেশ্যা ফিরে আসে আমার বিছানায় একই রাতে।  বেশ্যা , শব্দটা বেরিয়ে এলো।  কি ঘেন্না লাগছে।  নিজের মনে।  আমি তাহলে কাল রাতে হয়ে যাবো জিগোলো।  বারভাতারি।  যদি আমি জানতে না পারি সে  তার শরীর দিয়েছে অন্য পুরুষের কাছে।  যদি এখনো না জেনে থাকি।  ছিঃ , সন্দেহ করছি।  ওর সন্দেহবাতিকতায় এতদিন ঘেন্না করেছিলাম। আজ শুধু তাকে এনে দাঁড় করালাম , আমার জায়গায় আর আমি হয়ে গেলাম সন্দেহবাতিক।  সে তো সারাজীবন দেখেছে পুরুষের বহুগামিতা।  রোজ সে কত ভয়ে ঘেন্নায় এই সন্দেহ করে এসেছে।  সে তো জানে , এ হতেই পারে।  যে কোনো দিন সব শেষ হয়ে যেতে পারে শুধু কয়েক সেকেন্ডের ভুলের জন্য।  সে তো জানে, সমাজ যতই এগিয়ে যাক না কেন , পরিত্যক্তা এক তক্তার মতো,  যার মূল্য ওজন দরে।  সে তো ভয় পাবেই।  নাঃ , শরীর মনেরই অংশ , আর মন শরীরের।  পারলাম না , না ই বলে দিলাম।  তার পুরুষটাও তো জানতে পারতো না।  সে ও তো ভয়ে ভয়েই আছে আমার মতো।  হয়তো আমার আগেই সে বুঝে গেছে, তাই চুপ করে অপেক্ষা করছে এই সত্য উন্মোচনের।  আমিও অপেক্ষা করি , ভুল আমি আগে করলে আমি দোষী।  আর ভুল সে করলে কয়েকদিনের মধ্যেই একটু আগের আমি আবার খুলে ধরবো মন-শরীর।  ততক্ষন ইন্টারনেট জিন্দাবাদ।

ঠিক আগে সিরিজ



Thursday, November 22, 2018

ব্ল্যাক ফ্রাইডের ঠিক আগে




উফফ একটু পরেই  আবার ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেল । আবার সেই মারামারি , আবার সেই লাথালাথি। একটু ঘরের মাঝে দঁড়িয়ে দেখি তো আর কি কিছু চাই।  না তো , সবই তো আছে।  শোনার জন্য স্পিকার আছে , দেখার জন্য টিভি আছে , টিভিটা পাল্টালে হয় না।  টিভি খারাপ না হলে কি আর কেউ পাল্টায়?  পাল্টায় বই কি। বাবা শুধু পাল্টায়নি।  আমি পাল্টাবো।  না থাক।  কি হবে?  দিব্যি চলছে।  কিন্তু হেব্বি সেল দিচ্ছে।  এই ফাঁকে না কিনলে সামনের বছর হয়তো বেশি পয়সা দিয়ে কিনতে হবে।  জঘন্য এই সেল।  আবার গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হবে তিন ঘন্টা আগে থেকে।  তারপর মারামারি গুঁতো গুঁতি তো আছেই।  আর ভালো লাগে না বাপু।  ডোরবাস্টার না ছাই , কন্সিউমারিজমের চক্করে পকেট বাস্টার।  কিন্তু শব্দটা হলো “সেল” । শালা ফ্রি তে ঘুঁটে দিলেও মনে হয় ঘরে এনে সাজিয়ে রাখি।  মধ্যবিত্ত মন , বিলিয়ে যায় ধন।  স্যান্ডুইচ মেকার আছে , কিন্তু পানিনি গ্রিল এ ছাড় দিচ্ছে।  কিনে রাখতেই পারি।  কি হবে , পাউরুটি তো আর ভালো লাগে না।  কিন্তু ভালো লাগা তো যে কোনো সময়ে পাল্টে যেতে পারে।  সস্তায় দিচ্ছে তো।  মিক্সিটা খারাপ হয়ে গেছে , যেকোনো সময় দেহ রাখবে।  একটা ব্যাকাপ রেখে দিলে ভালোই হয়।  এবার আর ল্যাপটপ বা কম্পিউটার লাগবে না , কিন্তু একটা এক্সট্রা মনিটর হলে খারাপ হয় না।  যেকোনো দিন ছেলে ভেঙে দিতে পারে।  আরে এই অ্যাঙ্গেলটাতো আগে ভাবিনি।  ছেলেটা যে হারে টিভি ধরে ঝাঁকাচ্ছে , যেকোনো দিন তো ভেঙে দিতে পারে।  আর টিভি তো বাড়িতে ম্যান্ডেটরি , না হলে তো ছেলে খাবে না।  ইচ্ছা না থাকলেও যেতে হবে।  কিন্তু ওই ভিড়। শালা আগে থেকে ঠিক করে নিতে হয় কোনটা ডোরবাস্টার, কোনটা পরে আসবে , কোনটা ঝাঁপিয়ে পরে নিতে হবে, কোনটা গালে থাপ্পড় মেরে নিতে হবে। নাহলে শুধু গিয়ে হাঁ করে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।  গত কাল দেখে আসলে ভালো হতো, কোথায় কোন সেলের জিনিস রেখেছে।  নাহলে হয়তো ভুল লাইনে দাঁড়িয়েই জীবন শেষ হয়ে যাবে।  ধুর ধুর ধুর।  তার ওপর ওই লোকগুলোকে দেখতে হবে , যারা এক সাথে অনেক গুলো করে জিনিস কিনে রাখে আর থ্যাংকসগিভিং এর পরে লাভ রেখে বিক্রি করে।  কি যা তা। শালা , গুষ্টিশুদ্ধ লোক এসে দাঁড়িয়ে থাকে , এমনকি দেখা যাবে নিউ বর্ন ও একটা কিছু নিয়ে বসে থাকবে।  সব চোর জোচ্চোরের দল। কিন্তু কিছু করার নেই , গিন্নি চোখ দেখিয়েছে।  লাইনের সামনে না দাঁড়ালে ফ্রি গুলো নাকি পাওয়া যাবে না। তাতে ঠান্ডা হোক , গরম হোক , মিষ্টি মামনির প্রাদার পারফিউমে মিশে যাওয়া হোমলেসদের গায়ে চড়ানো রাগ এর গন্ধ ছড়ানো জায়গায় হোক , আমাকে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।  বছর বছর অদরকারি জিনিসে বোঝাই করে যখন ঘুরে এসে বলে পয়সা জমাওনি কেন তখন খ্যাঁক খ্যাঁক করে তেড়ে যেতে ইচ্ছা করে।  কিন্তু ওকে বলে কি করবো, ব্ল্যাক ফ্রাইডে  তো গেজেটের সেল।  আর পুরুষের গ্যাজেট প্রীতি কে না জানে।  আমিও হ্যাংলার মতো দাঁড়িয়ে থাকবো।  এই তো কিছুক্ষন আগেও সমস্ত দোকানের ফ্লায়ার গুলো চেক করছিলাম।  এক একটা থ্যাংক্সগিভিং এ লাইফস্টাইল একটু আপডেট করে নি।  পোর্টেবল স্পিকার থেকে , থ্রি চ্যানেল থেকে ফাইভ চ্যানেল।  এবারের ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে  “টুইটার” দেখি।  যদি চিক চিকে সাউন্ড টা বেশি বাড়ানো যায়।  সেনহেইজার না বোস , আপেল না কলা , তোমার পেছনে না লোকের পেছনে , এই করে গেলাম শালা প্রত্যেক থ্যাংক্সগিভিং এ।  অর্ধেক লোককে জিজ্ঞেস করলে বলবে , “থ্যাংক ইউ “  . পেটে জ্ঞান থাকলে এই হ্যাংলামো কমে যেত।  যেত কি ? উইকিপেডিয়ার থ্যাংক্সগিভিং পেজের প্রথম ভিউয়ার মনে হয় আমি ছিলাম।  তবুও তো এবারেও চেষ্টা করে যাচ্ছি।  দু চারটে যদি ফ্রি মাল বাগানো যায়।  কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে , সব জায়গাতেই একটা দুটো করে ফ্রি মাল দেয়।  কিন্তু আমি তো আর অমনিপোটেন্স বা সর্বভূতেহিতেরতাঃ নই।  “লাইন কাটলেন কেন “  এই বলে তেড়ে আসা ভুরিয়াল ভীতু বাঙালি।তাহলে কি করা যায়।  ওই একটা মোবাইল গ্রূপ চালু করতে হবে আর কি।  ভিখারিদের অর্গানিজশন থাকাটা খুব দরকার।  সারাদিনের ভিক্ষার শেষ সবাই ঝুলি উজাড় করে দেব কুন্তীর সামনে।  তারপর দ্রৌপদীকে ভাগ করে অর্জুনকে ভাগিয়ে দেব।  মাথা এক্কেবারে ঘেঁটে আছে।  ছকে ফেলে বকে যাওয়া সোজা , কিন্তু কিছু করা রীতিমতো চাপের। তার থেকে লুকিয়ে পড়ি।  কোথায় লুকাবো।  নিজের থেকে তো আর লুকানো যায় না।  সবাইকে দোষ দিচ্ছি বটে কিন্তু আমিও যে ভিড় বাড়াচ্ছি সেটা মানতেই  হবে। কিন্তু গার্হস্ত্যের প্রথম সোপান হচ্ছে তিক্কি তিক্কি করে পয়সা জমানো।  আর এই প্রসেসে পরে থাকা মাল আর গোবর ঘুঁটে করে বেচার নামই ব্ল্যাক ফ্রাইডে । ভাগ্যিস দেশে কেউ থ্যাংক ইউ বলে লাইন দিয়ে ঠ্যাং ভাঙার উপক্রম করে না। হোয়াটেভার,  অল পোস্ট রেডি , ওয়ালেট সামনের পকেটে , বাচ্চা স্ট্র্যাপড ইন স্ট্রলার , হেভি জ্যাকেট , মাসল ফ্লেকসড , চলো বৌ রেডি স্টেডি গোও-ও-ও-ও।

ঠিক আগে সিরিজ