Saturday, June 10, 2017

গিন্নী ও প্রবাস - সন্দেহবাতিক গিন্নি



বিয়ে অতি বিষম বস্তু সর্বদা স্পাউসের চরিত্রহীনতার কথা চিন্তা করে। রবীন্দ্রসঙ্গীতের রিমিক্স এর মত লেখাও রিমিক্স করা উচিত। বাংলায় স্পাউস এর কোনো সমার্থক খুঁজে না পাওয়ায় আচমকা ইংলিশের প্রত্যাবর্তন। বাংলায় শুধুই বর আর বউ। হাঁড়ি আর কলসি ভাত ফুটবে হাঁড়িতে। জল ঢালবে কলসি। তবু দুজনাই মনে করে শালা অন্য হাঁড়িতে জল ঢাললে কিরকম হয়, বা অন্য কলসির জল বেশি মিষ্টি। শুধু খটামটি  আর পেটাপেটি।

কাল রাতে আলোড়ন,"যখন ছেড়ে চলে যাব তখন বুঝবে।" বাপের বাড়ির কথা মেয়েদের যত তাড়াতাড়ি মনে পরে তার থেকে অনেক দেরীতে ছেলেদের আসুরিক কন্ঠে ঘোষণা ফোটে, "মনে রেখো-ও-ও  মেয়েরা কিন্তু আগে বুড়ি হয়। আমার সুযোগ তোমার থেকে বেশি।" কপাৎ করে ইনফিডিলেটি গিলে ফেললেন গিন্নি, "সেই জন্যই তো আজকাল শুধু ফেসবুকে ঢু ঢু। আমি যেন বুঝিনা। "

মহা জ্বালাতন এই ফেসবুক কে নিয়ে। কেন যে এমন ধারা একটা আইডিয়া ফেড়ে ফেলল অর্বাচীন লোকেদের দল অবশ্য ফেইসবুক এর আগেই মহান অর্কুট প্রচুর গিলিয়েছিল পৃথিবীকে। উদ্যেশ্য ছিল মেলানো। এখন পালানো। ফেইসবুক এ প্রেম করে যে কত লোক পালিয়ে গেল বউ ছেড়ে সে আর বলা বাহুল্য।এরকম উৎপটাং প্রেম করার সুযোগ কে ছাড়ে। তবে সেও যেন সংসার এর মত। সবটাই ধাঁধা। যাকে দেখছি সে হয়ত সে নয়। সে যদি সে না হয় তবে কে? যখন বার করা গেল সে কে? ততদিনে বিয়ের প্রমিস করা হয়ে গেছে। মন ছুটছে উরু উরু হয়ে। এখন আর এক নতুন ফ্যাকরা হয়েছে, লোকে না দেখে প্রেম করে। পুরনো দিনে পত্রমিতালির কেস এর মত।
"কার সাথে প্রেম করেছিস খুকু?"
"জন বল্ভলিয়া।"
"সে আবার কে?"
"আমার পত্রবন্ধু। জার্মানি তে থাকে। আমাকে বিয়ে করবে বলেছে। "
"তা কেমন দেখতে।"
"জানিনা তো।"
"তাহলে প্রেম করলি কি করে?"
"প্রেম কি আর দেখে হয় খুড়ি?"
প্রেম যে কিসে হয় ভগবান জানে আর বিয়ে করার পর যে কি করে দপ করে প্রেমটা নিভে যায় সেটাও জানা যায়না। তখন শুধু এটাই দেখা হয় যে স্পাউস নামক মাউস টা যেন কখনো পিছলে না যায়।তাই নানা ধরনের ইঁদুর কল। আমার গিন্নি বেনামে নতুন ফেইসবুক একাউন্ট খুলে আমাকে ট্র্যাক করছিল। চোদ্দ নাম স্ত্রী বুদ্ধি। নাম নিয়েছিল, "মেঘে ঢাকা তারা " , কোনো একটা সিনেমা থেকে ঝাড়া। ফার্স্ট নেম, মিডিল নেম, সারনেম।আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে চুপ চাপ চেপে ছিল বেশ কদিন। 

আমিও সবার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করি না। কে জানে কোথা থেকে কি হয়ে যাবে। আবার শ্বশুর বাড়ির লোকজন পিল পিল করে ঢুকে পরছে প্রোফাইল এ। সর্বদা কড়া নজর। সেদিন কম্মেন্ট এ লিখলাম, "আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে , আছ তোমরা  হৃদয় জুড়ে। " একটু মডিফিকেশান অফ শহীদুল্লা ।তুমির জায়গায় তোমরা করতেই শালা কমেন্ট মারলো "কি জামাই বাবু নতুন দলে পা দিচ্ছ নাকি? " শশুর ভিয়া শালীর প্রোফাইল , "কি ব্যাপার ? ঝগড়া টগরা  হয়েছে নাকি?" এক বন্ধু,"সবে তো কয়েকদিন বিয়ে করলি, এখুনি তুমি থেকে তোমরা করে দিলি। " ভাই লিখেছে,"ওটা তোমরা নয় তুমি। ওটা পাল্টা নাহলে আর বাড়িতে মুখ দেখাস না।" শেষে দিদি বলল, "তার মানে গুড নিউস?" কি জ্বালাতন। যাই হোক সুরসুর করে ডিলিট করে দিলাম কমেন্টসটা। কিন্তু গিন্নি ছাড়বে কেন। সাত দিন আমার কাছ থেকে এক্স্প্লানেসন চেয়েছিল যে ব্যাপার টা  কি

তা সেই প্রোফাইল আমি যখন সাত দিনেও এক্সেপ্ট করলাম না। আর রিমুভও করলাম না তখন একদিন বউ গায়ের কাছে এসে সোহাগ করে বলল, "ওগো, তুমি দাদার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আড্ড করলে না কেন?"  আমি অবাক, "কোন দাদা" "মেজদা " "কি নাম?" একটা ভয়ংকর খাঁটি বাংলা নাম নিয়ে ফেলল বউ। আমিও মিউ করে সাউন্ড করে রাত্রে শোয়ার আগে এক্সেপ্ট করে নিলাম সবার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। ঘুমের তরসে খেয়াল ছিল না, মেজ শালা আর  বড় বৌদি কে ঘরে ঢুকতে দিয়ে সাথে ভুল করে ইয়েস বলে দিয়েছি মেঘে ঢাকা তারাকে। ব্যাস আর যায় কোথায়। পরের দিন সকালেই দেখি বাক্স প্যাটরা  নিয়ে বউ হাওয়া  

খোঁজ খোঁজ খোঁজ। বিকেল বেলা মাস শশুরের ফোন, "এসব কি শুনছি বাবাতুমি নাকি অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করছ।" আকাশ থেকে পড়া পুরনো হয়ে গেছে। এখন পুরো ঘষে গেলাম কি করেছি কি করেছি ভাবতে ভাবতেই মাসতুতো শালী ফাসেবুকে পিইং করল, "জামাই বাবু , সারাদিন ফেইসবুক এ বসে আছ আর দিদি এখানে আমার কাছে চলে এসেছে। কি করছ কি।" 

কথাটা সত্যি। বউ রাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলে পুরুষের কোনো অধিকার নেই ফেইসবুক করার। কিন্তু কিছু করার নেই। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার হোম পেজ করে রেখেছি ফেইসবুক কে। অফিসের ল্যাপটপে এ এক ঘোরতর অপরাধ। অফিসওয়ালা দের কাছে নয়। যাদের জন্য অফিস করি তাদের কাছে। তাদের কাছে পুরুষ মানেই হলো ন্যাজ নারা  গরু। সরি পুরানো উপমা। এখন ওয়ান ওয়ে  রাস্তার মত। জুল জুল করে তাকিয়ে থাকবে বাঁদিকের রাস্তার দিকে কিন্তু কিছুতেই বেকতে পারবে না তিন কিলোমিটারের আগে। ঘোড়ার মত চক্ষে ঠুলি পরে সোজা যাবে, সোজা আসবে। 

ধরাম করে সামনের দরজা খুলে গেল। ওপাশে কি আছে। নিশ্চই সমাধান। কারণ, বউ কিছুতেই বলবে না কার সাথে প্রেম করছি। প্রথমে খুঁজে বার করার চেষ্টা করলাম কোথায় এবং কার সাথে প্রেম করছি। তার আগে সিওর হয়ে গেলাম প্রেম করছি। বিশ্ব প্রেম , মানব প্রেম এসব নিয়ে অনেক আর্টিকেল লিখেছি অনেক ওয়েব ব্লগে । আদ্যপান্ত পরে ফেললাম , যদি কোথা থেকে কিছু আলো পাই। লোকে বলে, যে আলো  দেখায় তার মুখ আলোর পেছনে অন্ধকারে দেখা যায় না। কিন্তু কোনো আলোই দেখতে পেলাম না, শুধু এক জায়গায় একটা বিবেকানন্দ ঝেরেছি পশু প্রেম নিয়ে, "জীবে প্রেম করে যেই জন। সেই জন সেবিছে ইশ্বর।" কেলো করেছে। শেষে পশুর সাথে প্রেম করছি। ভাবতেই ঘুলিয়ে উঠলো। আমার গিন্নি এই কথাটা ভাবলই বা কি করে? 

যাই হোক যখন ভেবেছে তখন তার ভুল ভাঙ্গতে হবে। ডিলিট করে দিলাম লাইন টা।সেন্ড করলাম বৌএর ইমেলে। উত্তর এলো, "আদিখ্যেতা।" তার মানে মেল সে চেক করছে।  বউ পালিয়ে ইমেল চেক করতে পারে। চ্যাট রুমে আগুন জ্বালিয়ে দিতে পারে। কিন্তু বউ পালিয়ে গেলে ফেসবুকে বরের যাতায়াত কিছুতেই মানা যায়না। চুপ চাপ ফুলে ছাপ। গোলাপ রজনীগন্ধা, জুই ইত্যাদির একটা অন্তাবারী গন্ধওয়ালা বোকে বানিয়ে পাঠিয়ে দিলাম। মেল এলো, "কচি কচি মেয়েদের এটা দিয়ে পটানো যায় আমাকে নয়।"

উল্টো পাঞ্চ।  সত্যি ইনি যখন কচি ছিলেন তখন একটা গোলাপেই পটে গেছিলেন এখন অনেক গোলাপেও চলে না। পটাতে গেলে গামছা পরে বাথরুম পরিষ্কার করতে হবে, রান্না করতে হবে না কিন্তু রান্নার পরে বাসন মাজতে হবে ইত্যাদি। মানে আগে সুন্দর গন্ধে ভরিয়ে দিতাম জীবন। এখন আমার জীবন দুর্গন্ধে ভরলেই তার শান্তি। 

একটা বিভত্স ফ্রাস্ট্রেটেড সুকান্ত মার্কা গম্ভীর ছবি তুললাম সেল্ফ টাইমার দিয়ে।  আপডেট করে দিলাম প্রোফাইল পিকচার। প্রথম কমেন্টস, মেঘে ঢাকা তারা,  "কি ব্যাপার? বউ পালিয়েছে নাকি?"  এটা কে? আমি তো মনে করতে পারলাম না আমি কবে একে এক্সেপ্ট করেছি। এ কি করে ঢুকলো? প্রশ্ন করলম, "তুমি কে?"  উত্তরে ওপেন প্রোফাইল নয়। ফেসবুক চ্যাটে লিখল "জানতে চাইলে কাল বিকেলে সিটি পার্ক এ সন্ধ্যে ছটায় পাঁচ নম্বর দোলনার কাছে আসতে হবে। " লিখলাম, "যদি দোলনা না ফাঁকা থাকে?" "আমি নীল কুর্তি পরে একটা ললিপপ খাব।" কিরকম খটকা লাগলো। ছেলেরা দোলনায় দুলে ললিপপ খাবে তবু লিখলাম, "আচ্ছা যাব।"
অফিসে একটা সাংঘাতিক টিম মিটিং এ ম্যানেজার, গ্রুপ লিডার আর জোনাল ম্যানেজার এর কাছে কুকুরের মত লাথি খেয়ে সব গেলাম ভুলে। মোবাইলে টিং করে মেসেজ এলো, "কি ব্যাপার এলে না তো।" নাম্বার টা খুব চেনা লাগলো।  পেটে আসছে মুখে আসছে না। বেশ কিছুক্ষণ ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে মেসেজ করলাম, "তুমি কে আর কোথা থেকে আমার নাম্বার পেলে?" উত্তর মেসেজ, "তোমার ফেইসবুক এ নাম্বারটা হাইড  করা নেই।" "তাই নাকি? তা তুমি কে? " , "মেঘে ঢাকা তারা।" আমার কেমন যেন সন্দেহ হলো।

গুবলেট পাকিয়ে গেল সবকিছু। শুধু মেসেজ করলাম, "তুমি ছেলে না মেয়ে?" "ছেলে হলে কি দেখা করবে না?" তার মানে নিশ্চই মেয়ে। আমি আর কোনো উত্তর দিলাম না। ফোন করা উচিত ছিল। কিন্ত সেটাও করলাম না। এরকম একটা কন্ডিসনে যখন বউ পালায় তখন অনেকের বউ এসে খুব জ্বালায়যদিও ব্যাপারটা বিশেষ জানাজানি হয়নি বলেই মনে হয় , নাহলে অর্কুট বা ফেইসবুক এ সাংঘাতিক জালাতন চলত যেটা চলছে না। যাইহোক, মোবাইল থেকে ফেইসবুক খুললাম বাসের জানালার ধরে বসে। 

মোবাইল এ একটু অন্য ধরনের সেটআপ থাকে ফেইসবুক এর। একটু অদ্ভূত তবু একটাই ভালো অন্য ভাবে দেখলে নাকি অনেক কিছু নতুন খুঁজে পাওয়া যায়। আনমনে ঘুরতে ঘুরতে পাতার পর পাতা ছবির পর ছবি দেখতে দেখতে হঠাত খুলে গেল, "মেঘে ঢাকা তারা" র প্রোফাইল টা। কেমন একটা অন্য নেশা জেগে উঠলো মেঘে ঢাকা তারার মেঘটা সরিয়ে তারাটাকে দেখার। নাম প্রোফাইল দারুন বানিয়েছে বেশ ভালো সব কিছু। দারুন রবীন্দ্রনাথের কমেন্টস নানা জায়গায় আর এবাউট মি তেউ। 

ইন্তেরেস্ট গুলো কেনো জানিনা আমার গিন্নির সাথে মিলে যাচ্ছিল। তাহলে কি ভগবান বলছে বউ পাল্টানোর সময় হয়েছে আর একটা সেম টাইপের মাল তোমার জন্য রেডি করে ফেলেছি।না না না। বাংলা সিনেমার হিরোর অনুপ্রাস এসে ধপাধপ মুখের ওপর লাগতে থাকলো। আর অদ্ভুত ভাবে বৌয়ের জন্য মন কেমন করে উঠলো। বাড়িতে গিয়ে ল্যাপটপ টা খুলে শুকনো মুড়ি চিবোতে চিবোতে আর "আর কত কাল একা থাকব " গান শুনতে শুনতে বউ এর প্রোফাইল এর ছবি গুলো দেখতে লাগলাম উল্টে উল্টে। হু হু করে উঠলো বুকটা।মনে কি দ্বিধা রেখে গেলে চলি। একটা কবিতা পেল লিখে ফেললাম। দুখের প্রকাশ, র-ফলায় ।

হঠাত মনে হলো কাকে পাঠাই। কে পড়বে? সবাই যদি জেনে ফ্যালে। অথচ মুরগির ডিম পারার মত কবিতা পেরে ফেলেছি। সেটা কাউকে না খাওয়ালে  কবির কবিত্ব থাকে না। এখানে স্বামী , দাদা, কাজের লোক এর থেকে কবি উপমাটা পাওয়ারফুল হয়ে গেল। ভাবতে ভাবতে "মেঘে ঢাকা তারার " কথা মাথায় এলো। সে তো আর জানে না যে আমার কি কেসআর জানলেই বা কি। পাঠিয়ে তো দি। কিন্তু মেসেযে পাঠাতে ইচ্ছা করছিল না। কবিতার মান কমে যায়। এটা বউই বলেছিল যখন আমি মোবাইল এ কবিতা লিখে মেসেজ এর মত ভেঙ্গে ভেঙ্গে পাঠাতাম। 

       তাই ওর ইমেল আইডি খুজতে লাগলাম ফেসবুকে। ইনফরমেশনে ক্লিক করে নিচের দিকে যেতেই চমকে উঠলাম। ঘটি উল্টে আলো হয়ে গেল চারদিক। শেষ মেষ সেই ফেসবুকই আলো দেখালো কার ফেস জানিনা তবে এই প্রথম দেখলাম ভক্ষক ই রক্ষক। ইমেইল আইডি তে দেখি দুটো ইমেইল আইডি। দ্বিতীয়টা  আমার গিন্নির। ব্যাস সব কিছু পরিষ্কার হয়ে গেল। স্ত্রীবুদ্ধি তে ওটা হাইড করা ধরেনি। 

       দুটো দুটো ব্রাউসার এ দুটো প্রোফাইল খুলতে আমি আরও হতবাক। কি বুদ্ধি আমার বউ এর। অসাধারণ প্রোফাইল বানিয়েছে। ফেবারিট বুক বউ এর "চার অধ্যায় " তো তারার "নৌকাডুবি " এর পর "কপাল কুন্ডলা "  তো তারার ,"দুর্গেশ নন্দিনী ". এরকম ভেবে ভেবে প্রোফাইল বার করার মত কত কষ্টই না করেছে ও আমাকে চরিত্রহীন প্রমান করার জন্য। 

       মেয়েদের মাথায় ভগবান যে কিসের জাল বুনে দিয়েছিল ভগবানই জানে। কিন্তু কিছু করার নেই। গভর্নমেন্ট ল-ইয়ার কে সখ্য রেখে সারাজীবনের সাধন সঙ্গিনী হিসেবে মেনে নিয়েছি যাকে তার এই ভুল কে ক্ষমা করার নামই তো সংসার। আসলে রাগ যতই হোক না কেন। এই তুচ্ছ কারণে ডিভোর্স দেওয়া যাবে না। আর একা থাকার কথা কিছু বডি পার্ট মেনে নিতে পারেনা। আমি কিন্তু আমার নধর ভুরির কথা বলছি। তারপর দ্বিতীয় বিয়ে করার খরচ আবার প্রচুর। এখনো আমার ম্যারেজ লোন চলছে। আর ক্ষমা করে দিয়ে বাড়িতে ডেকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে সেন্টু দিয়ে কাঁচুমাচু মুখ উপভোগ করার মত সময় আর সাহস আমার নেই। 
       অগত্যা পুরুষের সেরা অস্ত্র। মাছ ধরা। খেলিয়ে খেলিয়ে। ওর ফাঁদেই ওকে ফেলা। কুরকুর করে কুরকুরে খেতে খেতে ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে মেঘে ঢাকা তারার অরিজিনাল মেল এ প্রথমে কপি পেস্ট করে দিলাম সদ্য রচিত ব্যথা সম্বলিত কবিতাটাআর শেষে অনেক ভেবে গুঁজে দিলাম কিছু লাইন, 
"এটা তার জন্য লিখেছি যে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে আমাকে সন্দেহ করে। কিন্তু আমি চাই সে ফিরে আসুক। হয়ত তুমিই সেই কারণ তাই এই কবিতা টা পরে বুঝো, কেন আমি তোমাকে আমার প্রোফাইল থেকে ডিলিট করেছি। " 

মেল টা করে ফেইসবুক থেকে ডিলিট করে দিলাম "মেঘে ঢাকা তারা" কে।  আর কিছু করার নেই। অপেক্ষা। মিটি মিটি হাসতে হাসতে বিজয়ীর মত একটা বাদাম খোলা ছাড়িয়ে শুন্যে দিলাম চুরে খোলা মুখের ওপর পরার আগেই ফোন এসে গেল, "ওগো আমার ভুল হয়েছে। আমি সরি। কাল একটা জার্দৌসী সারি কিনে দেবে?" অ্যাট লাস্ট সত্যমেব জয়তে।    


গিন্নী ও প্রবাস আগের গল্পগুলি 

1 comment: