আপাতত
এটা মার্কেটে খুব চলছে। কেউ
কিছু করলেই, পুরুষ জাতি নিপাত যাক। আমিও
তাই চাই। শুধু আমি
না গেলেই হলো। হে-হে,
হেব্বি স্বার্থপর না আমি? তা আমি একটু বটে। আসলে পুরুষগুলো নিপাত নামক জায়গায়
যাওয়া শুরু করলেই মেয়েগুলোর কি হয় তা দেখার সাধ বড় প্রাণে। নিজের থুতু ফেলতে বা গিলতে সবার ভালো
লাগে , কিন্তু সেই ছোটবেলা থেকে অন্যের জন্য ফেলা থুতু গিলে চলেছি। সব দোষ পুরুষে করেছে আর যেহেতু তুমি
পুরুষ সেহেতু হিটলার , লাদেন বা নরেন্দ্র মোদী সবার দোষের ভাগ তোমার।
পুরুষজাতির
দোষের ভাগ নিতে নিতে মাথা ঝোঁকাতে ঝোঁকাতে ঘাড়ে স্পন্ডিলাইটিস হয়ে গেছে। এই যে চারিদিকে রেপ হচ্ছে, আর যেকোনো
ঠেকের আড্ডা শুরু হচ্ছে , এই যে তোরা পুরুষরা …. সেই
দায় তো সত্যি নিতেই হবে। কালকেই
তো নিজেকে স্বপ্নে ধনঞ্জয় মনে করে
ফাঁসির দড়ি গলায় পরে খাবি টাবি খেয়ে ঘুম থেকে উঠেচি। হ্যাঁ আমি পুরুষ। কচি মেয়ের মাংসে লোভ তো থাকবেই।
পাঁচদিন অফিসে সময় পাইনা, তাই সুযোগ পেলেই উইকেন্ড এ রেপ করি।
আমি আবার
খুব অত্যাচারী। বাড়িতে
অনেক মেয়ে পুষেছি - রাঁধুনি
আর কাজের লোক। তাদের
যখন তখন ধরি আর রেপ করি। কাজের
লোক আবার মায়ের বয়সী। ছোটবেলা
থেকে বড় করেছে। ফুল
ইনসেস্ট ফিলিং। রাঁধুনি রান্নাতে নুন বেশি দিলেই খপ চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে
নিয়ে যাই বেডরুমে। রেপ
হয়ে গেলে পাল্টে ফেলি। কখনো
কষে কষা , কখনো নিহারী , কখনো কাবাব। একই ভাবে, একই মাংস খাওয়া - আমার পোষায় না।
কচি তুলতুলে অনভিজ্ঞ আনাড়ি বালিকা কে নারী বানাতে আমার রক্তাক্ত দু মিনিট লাগে।
সকালে উঠেই পাশে শুয়ে থাকা আমার দেয়ালা করা ছোট্ট মেয়েটাকে দেখে যা লোভ লাগে না ?
কি বলবো। কেউ
জানতেও পারবে না। কথাই
তো ফোটেনি মুখে। পাশের
বাড়ির দিদিমা কাল সব দাঁত তুলে ফেলেছে। এবার
আমি ছক কষতে পারি। একটা
জিনিস তো দারুন করতে পারবে। সারা
দিন আমার চোখে - ঠোঁটে - গালে আর মাথায় শুধু বীর্য আর নানা নারীর গন্ধ।
আমাদের
পুরুষত্ব দুর্বার। এক নারীতে পোষায় না। হাজার
হাজার নারী , চাই তাড়াতাড়ি। কোন
শুয়োরের বাচ্চা বলেছে এক জীবন এক নারী - কমিটমেন্ট - থুহ। ওসব সোসাইটির জন্য। আমাদের জন্য আছে বেশ্যা , অতৃপ্ত বৌদি
আর “আমার বয়স্ক পুরুষ ভালো লাগে” । আমাদের জন্য বাস আছে , ট্রেন আছে , সেখানেই
আমাদের অপ্পেটাইজার। হাত
বাড়ালেই বন্ধু , পা বাড়ালেই রাস্তা। মেয়েরা
, সব মেয়েরা , বোকা মেয়েরা সব সস্তা। ধরা পড়লেই, আগে স্কার্ট ধরে টেনেছি এবার শাড়ি
উপড়ে নেবো ভরা জনসভায়। আমরা
গোষ্ঠীবদ্ধ , গ্যাংরেপ করি। রাতে
বেরোসনা মা , সকালে আমাদের দাঁড়ায় না। ধর্ষণের বর্ষা গিঁথে পেট ভরে , কিন্তু রড
দিয়ে অন্ত্র টেনে না বার করলে , রক্তের ডেসার্ট পাওয়া যায় না।
আমরা
পুরুষ , তাই ভয় আমরা পাইনা। পেতে
দেয়না সমাজ। যখনি কিছু ভুল করি , কেউ না কেউ এসে দাঁড়ায় পাশে। কঠিন এডাল্টারী কিরকম মিষ্টি শব্দ
ফস্টিনস্টিতে মিলিয়ে যায়। ডোমেস্টিক
ভায়োলেন্স এফ আই আর এর পাতায় সমাধান হয় ‘হতেই পারে’ বলে। ঝামেলা করলেই ওঝা দিয়ে ডাইনি প্রমান
করতে দু মিনিট লাগে। সকালে উঠেই তালাক তালাক তালাক। চা দিবিনা , যা শালা ডিভোর্সি খুঁজতে। সবাই ফ্রেশ মাল চায়। পাবিনা , কাঁদবি আবার আসবি ফিরে। আমরা শুধু নতুন চাকরি , নতুন শহর ,
আবার ফ্রেশ স্টার্ট। নারীবাদী
হবি , দেবো তোর মাকেই লেলিয়ে তোর পেছনে। সভা সমিতি , উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে ফেলে
নারী বাঁচাও হোস্টেল থেকেই রাতের জন্য তুলে আনবো নতুন নতুন খাবার। আমরা উদ্যম নিয়ে উদোম হতে ভালোবাসি। কেউ বলে না ঢাকা দিতে। বলবেও না। কারণ এখন আইন আমাদের হাতে। বেশি কাজ করলেই , প্রেগন্যান্ট করে
ফেলে রেখো দেব লিভ উইদাউট পে তে।
তাই তো
থুতু গিলছি। ভালোবাসি
বললেই , ভাবে রেপ করবো। না , পুরুষ ভালোবাসতে পারেনা। তার মাথা নেই , তার শরীর নেই , তার
বুদ্ধি নেই , আছে শুধু একটা অঙ্গ। সে
কবিতা লিখতে পারেনা , সে গল্প বলতে পারেনা , আকাশের ফুটে ওঠা তারায় আঙ্গুল দিয়ে
দিয়ে এক নারীর নাম লিখে যেতে পারেনা। পারেনা
গান গাইতে , পারেনা শিশুর মুখের হাসি ফোটাতে , নিজের খাবার পরিবারকে দিতে, হোস্টেল
মেসের অন্ধকারে তিক্কি তিক্কি করে পয়সা জমিয়ে দেশের বাড়িতে পাঠাতে। সে কাঁদে না , রাতে ঘুমায় , বেশি খায়
, আরাম কেদারায় পরে থাকে। সে
জড়ভরত , সে যুক্তিবাদী , বোকা-গাধা , অমানুষ। আর
তুমি যেই হও না কেন - কবি , সাহিত্যিক, সি ই ও , মন্ত্রী যতই তুমি দোকান চালাও ,
দেশ চালাও , রিক্সা চালাও - তুমি শুধু ধর্ষক। তুমি
শুধু নারী নিষ্পেষক। তুমি
শুধু নারীর শরীর উপভোগ করো আর ছিবড়ে ফেলে দাও থু থু করে।
কৈশোর
থেকে লড়ে চলেছি , প্রৌঢ়ে পরে মেনে নেবো। আর
তো কটা দিন বাকি। পুরুষরা
যা করে তার মতোই মিশে যাবো ভিড়ে। বয়ে
যাবে জল। ভুলে
যাবো আমি ‘মানুষটা’ কে ? আমার বেছে বেছে তোলা শব্দ , চয়ন করে মালা গেঁথে লেখা সেই
কবিতা গুলো আমার নয়। বেচে
দেব কোনো নারীর নাম করে। হা
হুতাশ করবো ভুল না করে শাস্তি পাওয়ার জন্য। লাইনে দাঁড়িয়ে পুড়ে যাওয়া শরীরটা সমান
হয়ে যাবে যেকোনো জেলের কয়েদিদের সাথে। সুন্দরকে সুন্দর বলবো না। বলবো না নারী তোমায় শুধু দেখতেই ভালো
লাগে। মানব না তাদের পছন্দ। কারণ আমি তখন পুরুষ। আমার নাম , আমার পরিবার , আমার ঠিকানা
, আমার শিক্ষা , আমার প্রেম , আমার জীবন সব মুছে গিয়ে দাঁড়াবে - আমি পুরুষ। আমি ভিড়। এক রাশ নোংরা পুরুষের ভিড়ে
আমি এক মাথা - এক অস্তিত্ব - এক নোংরা সমাধান।
No comments:
Post a Comment